শুভঙ্কর বসু: আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের চার পুরনিগমে ভোট। তবে তার আগেই ফের ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফ। এই আবহে পুরভোট পিছনো নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলার শুনানিতে ভোট পিছনো নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অবস্থান জানতে চাইল হাই কোর্ট। আগামী সোমবার হলফনামা জমার নির্দেশ। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী মঙ্গলবার।
শুক্রবার হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলাকালীন মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “বিধাননগরে ২৩টি কনটেন্টমেন্ট জোন। তাই প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে যেতে পারছেন না। ভোটাররা বাড়ি থেকে বেরোতে না পারলে ভোট দেবেন কী করে?” পালটা নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, “করোনার বাড়বাড়ন্তের কথা মাথায় রেখে নানা গাইডলাইন আনা হয়েছে। প্রাত্যহিক জীবন থেমে থাকে না। কমিশন শুধু এটুকুই বলতে পারে ভোট হলে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” রাজ্য নির্বাচন কমিশন চাইলে স্বাস্থ্যদপ্তর তাদের সাহায্য করতে পারে বলেই জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল। এরপরই হাই কোর্ট পুরভোট পিছনোর আরজি সংক্রান্ত মামলায় নির্বাচন কমিশনের অবস্থান জানতে চায়। আগামী সোমবার তা জানাতে হবে হাই কোর্টে। মঙ্গলবার ফের শুনানি। ওইদিন চূড়ান্ত হতে পারে পুরভোটের ভবিষ্যৎ।
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষের দিক থেকে করোনা ফের বিরাটাকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে লাগাম দিতে রাজ্যে জারি কড়া বিধিনিষেধ। সামান্য বেলাগাম হলেই পরিস্থিতি আরও বেগতিক হতে পারে বলেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পুরনিগমের ভোট কি আদৌ হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। গত সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও আপাতত ভোট পিছনোর প্রয়োজনীয়তা নেই। নির্দিষ্ট দিনেই হবে চার পুরনিগমের নির্বাচন। কারণ, কলকাতার তুলনায় ভোট হতে চলা চার পুরনিগমে সংক্রমণের মাত্রা অনেকটাই কম। তবে প্রচারের ক্ষেত্রে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্য জারি হয় নয়া নির্দেশিকা।
এই পরিস্থিতিতে বিমল ভট্টাচার্য নামে হাওড়ার এক বাসিন্দা পুরভোট পিছনোর দাবিতে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তিনি জানান, করোনা আবহে নির্বাচন হলে তা বড়সড় ঝুঁকি ছাড়া আর কিছুই না। কারণ, যেহেতু জনসভায় ৫০০ জনের উপস্থিতির অনুমতি রয়েছে, তাই ভিড় বাড়াবেন অনেকেই। তার ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে। ভেঙে পড়তে পারে চিকিৎসা ব্যবস্থা। তাই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আরজি জানান। ওই মামলার শুনানিতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অবস্থান জানতে চাইল হাই কোর্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.