অভিরূপ দাস: গত বৃহস্পতিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে (Calcutta Medical College) বাবাকে ভরতি করেছিলেন যুবক। এরপর যতবার ফোন করেছেন হাসপাতালের তরফ থেকে বলা হয়েছে, স্থিতিশীল আছেন রোগী। টানা ছ’দিন পর বাবার খোঁজে হাসপাতালে ছেলে জানতে পারলেন ভরতির দিনই মারা গিয়েছেন প্রৌঢ়! মর্মান্তিক এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা।
ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। একবছর ধরে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হাওড়ার সলপের অজয় মান্না। জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে তাঁর অল্প অল্প জ্বরও ছিল। বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অজয়বাবুকে। সেখানে পরীক্ষার পর জানানো হয় তাঁর করোনার (Corona Virus) উপসর্গ রয়েছে, এমআর বাঙুরে নিয়ে যেতে হবে। অ্যাম্বুল্যান্সে করে রোগীকে এমআর বাঙুরে নিয়ে গেলে তাঁরা জানায়, সেখানে শুধুমাত্র করোনা পজিটিভ হলেই ভরতি রাখা যায়। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। করোনা উপসর্গ থাকায় অজয়বাবুকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করা হয়। প্রাথমিকভাবে এই ওয়ার্ডে রেখেই করোনা টেস্ট করা হয়। পজিটিভ হলে তবে ভরতি করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কোভিড ওয়ার্ডে।
ভরতির পর হাসপাতালের তরফ থেকে রোগীর পরিবারকে বলা হয়, বাড়ির কারও থাকার প্রয়োজন নেই। সেইসঙ্গে দিয়ে দেওয়া হয় হেল্প লাইন নম্বরও। সেই নম্বরে নিয়মিত ফোন করলে বলা হত, “অজয়বাবু স্থিতিশীল আছেন।” ছ’দিন পর গত মঙ্গলবার চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালে যান অজয়বাবুর ছেলে রবিন। গ্রিন বিল্ডিংয়ের ‘করোনা সাসপেক্ট’ ওয়ার্ডে গিয়েই তাঁর চক্ষুচড়কগাছ। অন্য লোক শুয়ে আছে বাবার বেডে। ওই যুবকের কথায়, “দেখেই আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। অসুস্থ বাবা কোথায় গেল?” তড়িঘড়ি তিনি যান সুপারে ঘরে। জানতে পারেন তাঁর বাবা আপাতত মর্গে। গত বৃহস্পতিবারই মারা গিয়েছেন তিনি। এখানেই প্রশ্ন উঠছে বৃহস্পতিবার মৃত্যুর পর কেন তাঁর পরিবারকে কিছু জানানো হল না? কেন বারবার বলা হল তিনি স্থিতিশীল? এই ঘটনায় ফের প্রকাশ্যে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের স্বাস্থ্য কর্মীদের সমন্বয়ের অভাবেই দায়ী করছেন অনেকে। তবে মৃতের ছেলের কথায়, “আমাদের সঙ্গে যা হল এমনটা যেন আর কারও সঙ্গে না হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.