সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জোর করে নাবালিকাদের আটকে রেখে প্রতি রাতে হোটেলে বসত মধুচক্রের আসর। সুন্দরী যুবতী, নাবালিকাদের লোভেই আসত রাঘব বোয়ালরা। প্রতি সন্ধ্যায় মদ-টাকার ফোয়ারা ছুটত। আশেপাশের বাসিন্দারা সব জানলেও কোনও এক অদৃশ্য জাদুবলে চুপ করে থাকতেন। কিন্তু সিআইডির কাছে সব খবরই ছিল। সেইমতো নজরদারিও চলছিল। অপেক্ষা ছিল শুধু এক মোক্ষম মুহূর্তের। বামাল-সমেত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার জন্য। মধুচক্রের মক্ষীরানি আবার তিন মহিলা। আশেপাশের এলাকা থেকে নাবালিকা ও যুবতীদের জোর করে তুলে এনে এখানে রাখা হত। তারপর নামানো হত এই জঘন্য আদিমতম পেশায়। এই কাজে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল ওই মক্ষীরানিরাই।
নাবালিকা বা যুবতীরা এই নোংরা কাজে রাজি না হলে চলত মারধর, অত্যাচার। সোর্স মারফত এই খবর পেয়ে আর কালবিলম্ব করেননি সিআইডি অফিসাররা। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপর সুকান্তপল্লির ‘সিলভার ডোর’ হোটেলে বুধবার রাতে হানা দেন সিআইডি অফিসাররা। অভিযান চালিয়ে তাজ্জব তাঁরাও। দামি হোটেলের আড়ালে রমরমিয়ে চলছে দেহব্যবসা। এদিনের অভিযানে ২ নাবালিকা ও ৪ যুবতীকে উদ্ধার করেছে সিআইডি। তাঁদের প্রত্যেককেই জোর করে ওই হোটেলে আটকে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আক্রান্তরা। এর পাশাপাশি, মধুচক্র চালানোর অভিযোগে তিন মহিলা-সহ মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তার হয়েছে মধুচক্রের মক্ষীরানিরা।
শুধু তাই নয়, সিআইডি সূত্রে খবর, এদিনের অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ও একটি গাড়ি। এই গাড়িতে করেই নাবালিকাদের এই হোটেলে নিয়ে আসা হত বলে মনে করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতরা হল, সোদপুরের কৃষ্ণ দে (৩০), মথুরাপুরের বাসিন্দা মণীন্দ্র নাথ গিরি (৪৬), কাটোয়ার অমিত মাঝি (২৪), আগরপাড়ার গৌতম সাউ (৩১), পূর্ব মেদিনীপুরের রাজকুমার জানা (৩০), পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা সজল মিত্র (৩২), মধ্যমগ্রামের অরবিন্দ সরণির অমিত চক্রবর্তী (৩৪), লেক টাউনের রমেশ মুন্দ্রা (৪০) ও বাগনার সুরজিৎ দাস (২৫)। উদ্ধার হওয়া নাবালিকা ও যুবতীদের তাঁদের পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া ও অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি দেওয়াই এখন সিআইডির পরবর্তী লক্ষ্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.