ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ : সল্টলেকে বসে ভারত ও বিশ্বের আরও চারটি দেশের বাসিন্দাদের কোটি কোটি টাকার প্রতারণা। এরকমই পাঁচটি ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে সাতজন মাথাকে গ্রেফতার করল সিআইডি। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে ওই পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি চালান সিআইডির সাইবার শাখার আধিকারিকরা। তাতেই রহস্যের পর্দাফাঁস হয়ে যায়। এর আগে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ওই একই সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কল সেন্টারের মাথাদের গ্রেফতার করে। ইংল্যান্ডের অন্তত ২৩ হাজার জালিয়াতির মামলার কিনারা করেছিল লালবাজার। এবার সিআইডির তদন্তে ভারত, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া বহু মামলার কিনারা হতে পারে।
বুধবার ভবানী ভবনে ডিআইজি (সিআইডি) স্পেশাল মিতেশ জৈন জানান, সল্টলেকের পাঁচটি ভুয়ো কল সেন্টার থেকে একটি আন্তর্জাতিক কম্পিউটার সংস্থার নাম করে চলছিল প্রতারণা। ভারত ছাড়াও চারটি দেশের নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই পাঁচটি কল সেন্টারের সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রত্যেকটি কল সেন্টারে ২৫ থেকে ৬০ জন পর্যন্ত কর্মচারী কাজ করতেন। তাঁদের বলা হত, নিজেদের ওই আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে বিদেশে ফোন করতে। তাদের মূল টার্গেট ছিল এমন বয়স্করা, যাঁরা কম্পিউটার ব্যবহার করেন। কিন্তু প্রযুক্তি সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান তাঁদের নেই। ভুয়া কল সেন্টার থেকে ফোন করে ওই কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের বলা হত একটি লিংকে ক্লিক করতে। তাঁরা ক্লিক করামাত্রই কম্পিউটার ‘ফ্রিজ’ করে যেত। কোনও কাজ হত না। এবার প্রতারকরা ফোন করে বলত, ডলার বা পাউন্ড না পাঠানো পর্যন্ত কম্পিউটার ওই অবস্থায় থাকবে। তাঁরা বাধ্য হয়েই বিশেষ কয়েকটি অ্যাকাউন্টে প্রতারকদের দাবিমতো মোটা টাকা পাঠাতেন। এভাবে কয়েক কোটি টাকা প্রতারণা করেছিল অভিযুক্তরা।
জানা গিয়েছে, ধৃতরা প্রত্যেকেই শিক্ষিত ও আইটি সেক্টরে কাজ করে এই প্রতারণায় নেমেছে। তারা প্রত্যেকেই প্রতারণার টাকায় বিলাসবহুল জীবন যাপন করে। যেহেতু বিদেশের বাসিন্দাদের প্রতারণা করা হত, তাই রাতেও কাজ হত ওই কল সেন্টারগুলি থেকে। সিআইডির মতে, রাজ্যের আরও জায়গায় এভাবেই ভুয়ো কল সেন্টার খুলে ছড়ানো হয়েছে প্রতারণার জাল। ওই চক্রের মাথাদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.