মলয় কুণ্ডু: ওয়াকফ সংশোধনী আইন মুসলিমদের মৌলিক অধিকার বিরোধী, সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা। এভাবেই নতুন সংশোধনীকে ব্যাখ্যা করছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ। তাদের প্রতিবাদে বাংলার কোথাও কোথাও অশান্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে পুলিশি সক্রিয়তায় আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এরাজ্যে নয়া ওয়াকফ আইন লাগু করার বিপক্ষে সরকার। বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মোয়াজ্জেনদের সমাবেশে সেই বার্তাই আরও একবার স্পষ্ট করে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলেন শান্তি, সম্প্রীতির বার্তাও। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ”অনেক হিন্দু ওয়াকফ বোর্ডে সম্পত্তি দান করেছেন। এমনকী তাঁরা কেউ কেউ ওয়াকফ বোর্ডের সদস্যও। এই সংশোধনীর নামে রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাইছে কেন্দ্র।”
নয়া ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় শুধু বাংলাই নয়, উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। সুপ্রিম কোর্টে এনিয়ে প্রচুর মামলা দায়ের হয়েছে। সংসদে সংশোধনী বিল পাশের সময় তীব্র বিরোধিতা করেছিল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিল পাশ হয়ে যায় সংসদের দুই কক্ষে। পরে রাষ্ট্রপতিও বিলটিতে সই করে দেন। বুধবার রাজ্যের ইমাম-মোয়াজ্জেনদের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুললেন, ”আইন পাশে এত তাড়াহুড়োর কী ছিল? আমাদের সাংসদরা অনেক লড়াই করেছেন এর বিরোধিতায়। কেন্দ্র একতরফাভাবে আইন পাশ করিয়েছে।” এরপরই তাঁর বক্তব্য, ”বিজেপিকে জানিয়ে রাখি, অনেক হিন্দুর সম্পত্তি রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডে। তাঁরা ওয়াকফ বোর্ডের সদস্যও। এখানে এভাবেই কাজ হয়। আসলে বিজেপি এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাজ্যের যে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা, তা খারিজ করতে চায় কেন্দ্র। আর কত ক্ষমতা চান আপনারা?”
এদিনের সমাবেশে শুধু ইমাম-মোয়াজ্জেনদের সংগঠনই নয়, হাজির ছিলেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। সনাতন ব্রাহ্মণ সমাজ থেকে শিখ সংগঠনের প্রতিনিধিদের মঞ্চে ডেকে পাশে দাঁড় করিয়ে সম্প্রীতির ছবিটা আঁকলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাতেই বুঝিয়ে দিলেন, কোনও ইস্যুতেই এ রাজ্যের সৌহার্দ্য পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। বিজেপিকেও সেই বার্তা দিয়ে তিনি বললেন, “বিভাজন-ভাগাভাগি নয়, বিজেপি, জোড়ো।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.