তরুণকান্তি দাস: গতকাল ছিল সিনেমার প্রথম ধাপ, বুধবার তা শেষ হল৷ গতকাল পদ খুইয়েছিলেন রাজ্য মন্ত্রিসভার তিন মন্ত্রী৷ বুধবার, রদবদল ঘটল একাধিক হেভিওয়েট মন্ত্রীর পদে৷ কারও দায়িত্ব বাড়ল, আবার ডানা ছাঁটা হল কারও৷ উল্লেখযোগ্য ভাবে, দপ্তর কমিয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হল বিতর্কের মধ্যে থাকা দমকল মন্ত্রী তথা মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে৷ মন্ত্রীদের পাশাপাশি রদবদল ঘটানো দল জেলাশাসক ও সচিব পর্যায়ে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, পারফরম্যান্সই শেষ কথা৷
[শহরে প্রতি ধাপে বাস ও মিনিবাসের ভাড়া বাড়ছে ১ টাকা করে]
নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়৷ মন্ত্রিসভার রদবদলে তাঁর দায়িত্ব কমিয়ে দেওয়া হল৷ তাঁর কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হল পরিবেশ দপ্তর৷ বাড়তি দায়িত্ব হিসাবে সেই দপ্তর দেওয়া হল পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে৷ সেচ দপ্তর থেকে সরিয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে দেওয়া হল অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দপ্তরের দায়িত্ব৷ এই দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন চূড়ামণি মাহাতো৷ গতকালই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ সেচ দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া দল সৌমেন মহাপাত্রকে৷ আবার সৌমেন মহাপাত্রের হাতে থাকা জলসম্পদ দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হল পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে৷ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মলয় ঘটকে৷ গতকাল আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের দায়িত্ব থেকেও জেমস কুজুরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই দপ্তরটি নিজের হাতেই রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কেবল মন্ত্রীদেরই কপ্তর বদল হল না৷ পাশাপাশি, রদবদল ঘটানো হল জেলাশাসক ও সচিব পর্যায়েও৷ ৮ জেলায় জেলাশাসক পদে পরিবর্তন করা হয়। বদলি করা হল ৫ সচিব পর্যায়ের আমলাদের।
[টাকা ছড়িয়ে বাংলার মাটি গেরুয়া করা যাবে না, বিজেপিকে তোপ অভিষেকের]
সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে অসাধারণ ফল করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সব জেলা পরিষদ গিয়েছে ঘাসফুলের ঝুলিতে। কিন্তু শাসকের রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছে জঙ্গলমহলে৷ পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো একাধিক জেলায় শাসকের চোখের আড়ালেই নিজেদের মাটি শক্ত করেছে বিজেপি। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামে কার্যত নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে তৃণমূল। যে আদিবাসী আবেগকে মূলধন করে ৩৪ বছরের বাম জমানার ভীত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের নির্বাচনে তাঁর দলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেই আদিবাসী সমাজ। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁদের রাগ নয়, তাঁদের ক্ষোভ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের উপরে। ঠিক সেই কারণেই আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর নিজের হাতে রেখে আদিবাসী সমাজের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.