স্টাফ রিপোর্টার: আর জি করে মেডিক্যাল কলেজে ( RG Kar Medical College) ময়নাতদন্তের দেহ পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে পাঠানোর ঘটনায় জটিলতা আরও বাড়ল। এবার ঘটনার রেশ পৌঁছে গেল নবান্নে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছে এক মৃতের পরিবার। অভিযোগ, পরিবারের অনুমতি ছাড়াই ময়নাতদন্তের জন্য আনা মৃতদেহ ইএনটি’র কর্মশালায় আনা হয়। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও এবিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন আর জি করের অধ্যক্ষ ডা: সন্দীপ ঘোষ।
অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে লালবাজারের অস্বাভাবিক মৃত্য়ুর পোর্টালে ময়নাতদন্তের রির্পোট ঘিরে। পাঁচটি রির্পোট উল্লেখ করা হয়েছে, মৃতের নাসিকায় অন্তত ১ ইঞ্চি গভীর ক্ষত। কেন মৃতের নাসিকায় ক্ষত তা অবশ্য জানাতে অস্বীকার করেছেন ফরেন্সিক মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান ডা: সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। তবে চিকিৎসকদের অভিমত, ইএনটি’র প্রশিক্ষণের সময় সম্ভবত মৃতদেহে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। পাঁচটি মৃতদেহের একই জায়গায় ক্ষতচিহ্ন। এমনকি প্রতিটি মৃতের নাক থেকে হলুদ রঙের তরল পদার্থ বেরিয়ে আসার দাগ স্পষ্ট। রির্পোটে আরও উল্লেখ্য করা হয়েছে মৃত্যুর আগে নয়। মৃত্যুর পরই ক্ষত করা হয়েছিল দেহগুলিতে। কারন দেহের স্নায়বিক কোনও পরিবর্তন হয়নি।
এই প্রসঙ্গে অ্যানাটমিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার রাজ্য শাখার সভাপতি তথা এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা: অভিজিৎ ভক্তের কথায়,‘‘তিনটি বিষয়কে মনে রাখতে হবে। প্রথমত,ময়নাতদন্ত করার পর সেই মৃতদেহ প্রশিক্ষণের কাজে নেওয়া যাবে না। কারন দেহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ থাকে না। দ্বিতীয়ত, কোনও প্রশিক্ষণ বা গবেষণার জন্য দেহ নিতে গেলে মৃতের নিকটতম আত্মীয়ের অনুমতি নিতেই হবে।’’ অভিজিৎবাবুর আরও বলেছেন,‘‘এতকিছুর পরেও কলেজের এথিক্যাল কমিটির অনুমতি নিতেই হবে। এবং আইনি বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস ছিল। তার জন্য় কয়েকটি দেহের প্রয়োজন ছিল। অভিযোগ, ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো একাধিক দেহ না কি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই কর্মশালায়। যা আদপে নিয়ম বিরুদ্ধ। এব্যাপারে এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গেল অভিযোগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.