অভিরূপ দাস: আরজিকরে ধর্ষিতা তরুণী চিকিৎসককে নিয়ে চলছে সিবিআই তদন্ত। সমান্তরাল ভাবে চলছে চলছে ইয়ারকি, ফাজলামি, রঙ্গ-উপহাস। সামাজিক মাধ্যমে হরেক ‘রিল’, মিথ্যে খবর তো আছেই। তালিকায় নয়া সংযোজন মৃত তরুণী চিকিৎসকের আত্মাকে হাজির করিয়ে সাক্ষাৎকার! সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ‘প্ল্যানচেট’ করে নিহত তরুণীর আত্মাকে ডেকে এনেছেন এক ইউটিউবার। মাত্র তিনদিনে ন’লক্ষের কাছাকাছি মানুষ দেখে ফেলেছেন সে ভিডিও। ইউটিউবারের দাবি, ‘‘আরজিকর মেডিক্যাল কলেজেই রয়েছে নিহত তরুণী চিকিৎসকের আত্মা। তিনি আমায় বলছেন, ওই রাতে কী হয়েছিল।’’ এই ধরণের ভিডিওতে চূড়ান্ত আপত্তি প্রকাশ করেছে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি। সমিতির সভাপতি দিলীপ দাস মণ্ডল, কার্যকরি সভাপতি দিনেশ সাহা, সাধারণ সম্পাদক মনীশ রায়চৌধুরী একযোগে জানিয়েছেন, যদি সত্যিই কেউ আত্মা হাজির করাতে পারেন তাহলে এত তদন্তের কি প্রয়োজন? সেই তো সব বলে দেবে। আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের প্রমাণ দিলে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়!
ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পক্ষ থেকে ইস্তেহার প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘‘সম্প্রতি আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মতো মর্মস্পর্শী একটি ঘটনা নিয়ে ইয়ারকি চলতে দেওয়া যায় না। সমাজে এমন অনেক স্বঘোষিত বাবাজি, মাতাজি, পীর, ফকির আছে যারা নিজেদের অলৌকিক, দৈব ক্ষমতার অধিকারী বলে দাবি করে থাকে। অনেকেই আছেন যারা প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর বলে নিজেকে দাবি করে ইএমএফ ডিটেক্টর, থার্মাল স্ক্যানার, ইকোভক্স নিয়ে প্রেতাত্মার সন্ধানে ঘুরে বেরান।’’ এহেন ইউটিউবারদের দাবি, প্ল্যানচেট করে এরা মৃত মানুষদের আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন। যাঁরা এই দাবি করেন তাদের জন্য ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি ৫০ লক্ষ টাকার চ্যালেঞ্জ দিয়েছে। কি সেই চ্যালেঞ্জ?
আর জি করের ঘটনাটি এই মুহূর্তে তদন্তাধীন। সেই রাতে কি হয়েছিল তার উত্তর খুঁজছে সিবিআই। বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনীশ রায় চৌধুরীর কথায়, মোবাইলে ভিডিও করে কি লাভ? যদি সত্যিই কেউ তরুণীর আত্মাকে হাজির করতে পারেন তাহলে তো অনেক সমস্যার সমাধান হবে। যাঁরা ইউটিউব ভিডিওতে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের নিহত চিকিৎসকের আত্মাকে আনার দাবি করছেন, তারা সামনে আসুন। আমাদের সমিতির সদস্যদের উপস্থিতিতে তথাকথিত প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসকের আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করুন। প্রকাশ করুন খুনিদের নাম। যুক্তিবাদী সমিতির কথায়, যদি সত্যিই তারা এমনটা করতে পারেন তাহলে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। আর যদি না পারেন? সমিতির যুক্তি, ‘‘তাহলে প্রমাণ হবে তারা নির্লজ্জ প্রতারক। স্রেফ ভিউ বাড়ানোর জন্য লোক ঠকাচ্ছেন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.