সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ। তাই আতঙ্কের জেরে করোনা রোগীকে ২০ ঘণ্টা তালাবন্দি করে রাখা হল! রোগীকে নয় রোগকে এড়িয়ে চলুন! বারবার একথা বলা হচ্ছে। তারপরও কেন এভাবে চরম পরিস্থিতির স্বীকার হতে হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের? উঠছে প্রশ্ন। গোড়া থেকেই করোনা-আক্রান্তদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর কথা প্রচার করা হলেও আদৌ কি সেই নির্দেশিকা মেনে চলছে কেউ? এমন প্রশ্নই উঠছে ঠাকুরপুকুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দপুরের এক যুবক ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। তাই বাবাকে নিয়ে ওই যুবক ও তাঁর এক আত্মীয় কাছাকাছিই একটি বাড়িতে ঘর ভাড়া করে থাকছিলেন। চিকিৎসা চলাকালীনই করোনা পরীক্ষা করানো হয় তাঁকে। এরপরই তাঁর শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। বুধবার রাতে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে ফোন করে জানানো হয় যে ওই যুবক করোনা আক্রান্ত। তাঁদের বলা হয়, তাঁরা সকলেই যেন বাড়িতে থাকেন। এবং খুব শিগগিরিই ওই যুবককে হাসপাতালে ভরতি করা হবে। কিন্তু আক্রান্তের আত্মীয়ের অভিযোগ, কোন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে, কখন অ্যাম্বুল্যান্স আসবে, সেসব কিছু জানানো হয়নি তাঁদের। তবে তার থেকেও গুরুতর অভিযোগ, করোনা সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই আক্রান্ত রোগী-সহ তাঁর বাবা ও আত্মীয়কে একঘরে তালাবন্দি করে দেওয়া হয়।
করোনা আক্রান্ত যুবকের বাবার কথায়, একটা ছোট ঘরে তাঁরা তিন জন আটকে ছিলেন। বাইরে থেকে দরজা বন্ধ। খাবারদাবার কিছুই ছিল না তাঁদের কাছে। সঙ্গে যেটুকু মুড়ি ছিল, সেটা খেয়েই কাটিয়েছেন সারা দিন। ওইটুকু বদ্ধ ঘরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা, তিন জনের থাকাটাও খুব কঠিন বলে জানিয়েছেন তিনি। রোগীর আত্মীয়ের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন যদি দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করতে পারত, তাহলে হয়তো এভাবে ২০ ঘণ্টা বন্দিদশায় কাটাতে হত না তাঁদের।
এদিকে স্থানীয় হরিদেবপুর থানার তরফে জানানো হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট এলাকায় গতকাল ৬জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরকে যোগাযোগ করা হলেও অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাতে দেরি হচ্ছে তাদের। কিন্তু ২০ ঘণ্টা ধরে রোগী ও তাঁর পরিজনদের একঘরে আটকে রাখার কথা জেনেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না? সেই প্রশ্ন উঠলেও তার উত্তর এখনও অধরাই!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.