দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনা আতঙ্কে ছুটি ঘোষণার পর মিড ডে মিলের চাল, আলু বিতরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মত স্কুলে স্কুলে পড়ুয়া পিছু ২ কেজি করে চাল ও ২ কেজি করে আলু দেওয়া হয়। নির্দেশ ছিল অভিভাবকরা এসে ওই সামগ্রী নিয়ে যাবেন। কলকাতা সহ জেলার কিছু স্কুলে অভিভাবকদের সঙ্গে কিছু পড়ুয়াও হাজির হয়। সোমবার সেই খবর জানতে পেরে শাস্তিমূলক বদলি করা হল যাদবপুর বিদ্যাপীঠ ও কাটজুনগর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষককে।
করোনা সংক্রমণ রুখতে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ছুটি ঘোষণার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, স্কুলে যারা মিড ডে মিল পায় তাদের প্রত্যেকের বাড়িতে ২ কেজি চাল এবং দু কিলো আলু পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
পরে স্কুল শিক্ষা দপ্তর সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল থেকেই চাল ও আলু বিতরণ করা হবে। সেই কাজই তদারকি করতে ২২ মার্চ রবিবার কলকাতার প্রধান শিক্ষকদের স্কুলে যেতে হয়েছিল। পরের দিন দিনভর চাল ও আলু বিতরণ করা হয়। এসবের মাঝে রাতে কলকাতার দুটি স্কুলকে দোষী সাব্যস্ত করে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় যাদবপুর বিদ্যাপীঠ ও কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষককে চিঠি পাঠান। তাঁদের শাস্তিমূলক বদলির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। ওই দুই প্রধান শিক্ষকের ‘অপরাধ’ কেন স্কুলে অভিভাবকদের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা এসে চাল ও আলু সংগ্রহ করেছে। করোনা আতঙ্কের মাঝে এই শাস্তিমূলক বদলির খবরে ক্ষুব্ধ শিক্ষকমহল। তাঁদের বক্তব্য, করোনা সংক্রমণ রোধ করাই যদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে এই সময়ে কেন চাল, আলু বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? আর ছাত্রছাত্রীদের যদি সংক্রমণের ভয় থাকে তাহলে কি অভিভাবকেদর সেই ভয় নেই ?
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্যকে পাঠানো হয়েছে রানীভবানী হাইস্কুলে। কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠের কাজী মাসুম আক্তারকে পাঠানো হয়েছে বাগবাজারের হরনাথ হাই স্কুলে। প্রসঙ্গত, এই কাজী মাসুম আখতারকে কেন্দ্রীয় সরকার কিছুদিন আগে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেছে। সরকারি সিদ্ধান্ত জানার পর একাধিক শিক্ষক সংগঠন জানিয়েছে এই সিদ্ধান্ত অন্যায়, আমরা আদালতে যাব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.