অর্ণব আইচ: একশো বছর ধরে কি এই মামলার তদন্ত চলবে? প্রশ্ন তুলে ফের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের উপর উষ্মা প্রকাশ করল আদালত। সোমবার ব্যাঙ্কশালে ইডির বিশেষ আদালতে রেশন বন্টন দুর্নীতির অভিযুক্ত উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার নেতা আনিসুর রহমান, আলিফ নুর, শঙ্কর আঢ্য, বিশ্বজিৎ দাসকে তোলা হয়। আনিসুর ও আলিফের দশ দিনের ইডি হেফাজতে ছিলেন। ইডির পক্ষে তাঁদের জন্য আরও চার দিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়।
আলিফ নুরের আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন করে আদালতে জানান, ইডি এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে টকা তছরূপের লেনদেন সম্পর্কে তদন্ত না করে মূল অপরাধের বিষয়গুলি নিতে তদন্ত করছে। বিচারক ইডিকে প্রশ্ন করেন, আনিসুর ও আলিফকে ইডির হেফাজতে রাখার প্রয়োজন কী? ইডির দাবি, আলিফ রেশন বন্টন দুর্নীতির টাকা তছরূপ করেছে। তাঁর ভাই আনিসুর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক কাজে সেই রেশন দুর্নীতির টাকা কাজে লাগিয়েছেন।
বিচারকের প্রশ্ন, গত দশদিন হেফাজতে থাকাকালীন ইডি কতজনকে জেরা করেছে? বাকি সময় কী করেছে? ইডি জানায় ন’জনকে জেরা করা হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকের দাবি, তদন্তে চারশোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে। কর্মচারী ও আত্মীয়দের ভুয়ো কৃষক সাজিয়ে এই চারশোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আনিসুর ও আলিফ বিপুল টাকা পাচার করেন। এখনও পর্যন্ত দু’লাখ টাকার তছরূপের সন্ধান মিলেছে বলে ইডির দাবি।
আদালতে ইডি দাবি তোলে, এই দুর্নীতিতে রাজ্যে মোট ১৪৭টি মামলা হয়েছে। বিচারকের প্রশ্ন, কেন মিল মালিকদের অভিযুক্ত করা হয়নি? আবার বালিগঞ্জের চান্দের ভাইদেরও গ্রেপ্তার করা হয়নি কেন? উষ্মা প্রকাশ করে বিচারক প্রশ্ন করেন, একশো বছর ধরে কি এই মামলা চলবে? ইডির আইনজীবী জানান, এই মন্তব্যে তাঁরা হাস্যকর হয়ে উঠেছেন। তদন্তের বাক্সের ঢাকনা সবে খোলা হচ্ছে। এর পরও ইডির উপর উষ্মা প্রকাশ করে বিচারক বলেন, “ঢাকনা খুলে আরও তথ্য বের হবে, এসব আর শুনব না। তদন্তের গতি কবে বাড়বে? কবে মামলার শুনানি শুরু হবে? যুক্তি দিয়ে আপনারা আদালতকে সন্তুষ্ট করুন।” এদিকে, আনিসুর ও আলিফের আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁদের ভোর চারটের সময় ঘুম থেকে তুলে জোর করে নিজেদের বয়ানে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যদিও ইডির দাবি, কিছু অনুবাদের নথি সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে মাত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.