গৌতম ব্রহ্ম: প্যারাসিটামল, পর্যাপ্ত জলপান, প্রয়োজনে অ্যাজিথ্রামাইসিন ও অক্সিজেন। এই সহজ ফরমুলাতে চিকিৎসা করেই করোনা নিরাময়ে সাফল্য পেয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। এই চিকিৎসায় এতটাই কার্যকরী যে, এখনও পর্যন্ত একজন রোগীরও ভেন্টিলেশন সাপোর্ট লাগেনি। ব্যবহার করতে হয়নি সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোনও অ্যান্টি ভাইরাল।
এখনও পর্যন্ত ২৪ জন করোনা পজিটিভ রোগীর চিকিৎসা করেছে বেলেঘাটা আইডি। একটিও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। ১২ জন ইতিমধ্যেই করোনামুক্ত হয়েছেন। বাকি রোগীরাও ভাল আছেন। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনার ছোবলে তিনটি মৃত্যু হয়েছে। প্রথমটি সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। দ্বিতীয়টি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এবং তৃতীয়টি হাওড়া জেলা হাসপাতালে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, আইডি হাসপাতালের ডাক্তাররা যে প্রোটোকল মেনে পরিষেবা দিচ্ছেন তা কি বাকিরা অনুসরণ করছেন না? COVID পজিটিভ রোগীরা কিন্তু সবাই আইডিতে এসেই চিকিৎসা করাতে চাইছেন। চিকিৎসকরা অবশ্য জানিয়েছেন, করোনা চিকিৎসায় শীঘ্রই অভিন্ন প্রোটোকল কার্যকর করবে রাজ্য। আর এই ব্যাপারে বেলেঘাটা আইডি’ই হবে উদাহরণ।
আইডি থেকে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ জন। এর মধ্যে রয়েছেন স্কটল্যান্ড ফেরত হাবড়ার তরুণীও। তার কাছ থেকেই জানা গিয়েছে, ডাক্তারবাবুরা নিয়মিত রোগীদের কাউন্সেলিং করে মনের জোর বাড়িয়েছেন। গল্পের বই, নেটফ্লিক্সের সিনেমা দেখার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। ডাক্তারবাবুরা একটা বিষয় মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন, আতঙ্কগ্রস্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে, জিতে যাবে করোনা। এটাকেই মূলমন্ত্র করে পজিটিভ রোগীরা নিজেদের চাঙ্গা রেখেছেন। এটাও সাফল্যের অন্যতম রেসিপি। জানা গিয়েছে, অল্পবয়সী আক্রান্তদের মধ্যে সামান্য জ্বর থাকলেও কাশি বা শ্বাসকষ্ট সেই অর্থে হয়নি। বয়স্কদের ক্ষেত্রে কয়েকজনকে অক্সিজেন দিতে হয়েছে। কয়েকজনের অ্যাজিথ্রামাইসিনের মতো অ্যান্টি বায়োটিকও দেওয়া হয়েছে। আর বারবার জল খেতে বলা হয়েছে। ডায়েটের দিকেও ছিল তীক্ষ্ণ নজর। বালিগঞ্জের পরিবারটিকে বাদ দিয়ে (ওনারা নিরামিশাষী) বাকিদের সবাইকেই মাছ-মাংস-ডিম দেওয়া হয়েছে। বালিগঞ্জের পরিবারটির খাবার এসেছে বাড়ি থেকে। চিকিৎসকদের মতে, এটা প্রমাণিত প্রোটিনযুক্ত খাবার ইমিউনিটি (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) বাড়াতে সাহায্য করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.