অভিরূপ দাস: লকডাউনে তিনি একদিনও বিশ্রাম না নিয়ে রোগী দেখেছেন। আনলক পর্যায়ে তিনিই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। বাইপাসের ধারে মেডিকা হাসপাতালে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মৃত্যু। শোকবিহ্বল এলাকাবাসীর চোখ কপালে উঠল হাসপাতালের বিল দেখে। প্রায় ১৯ লক্ষ! এরপরেই সোশ্যাল সাইটে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। শ্যামনগরের প্রয়াত চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্যের এই বিল দেখে চোখ কপালে উঠেছে স্বাস্থ্য কমিশনেরও।
মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকে টেক্সট মেসেজ করে করোনা আক্রান্ত মৃত চিকিৎসকের আকাশছোঁয়া বিল ফের রিভিউ করে কিছু টাকা পরিবারের হাতে দেওয়ার জন্য আবেদন জানাল রাজ্যের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। এমন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিল পুনরায় বিবেচনা করে কমানোর নির্দেশ শুধু এই প্রথম নয়, এককথায় নজিরবিহীনও বটে! উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত জনপ্রিয় চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্যের মৃত্যু নিয়ে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, “উনি নিজে চিকিৎসক হয়ে অনেক সময়েই দরিদ্র রোগীর কাছ থেকে ভিজিট নিতেন না। নিজেই পকেট থেকে ওষুধের টাকা দিয়ে দিতেন। এমন একজন চিকিৎসকের মৃত্যুতে তাঁর সহকারীরা ১৯ লক্ষ টাকা বিল করল। এটা অমানবিক।”
সেই বিলেরই এবার তথ্য তলব করল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। বিল রিভিউ করে দেখে কিছুটা কমানো যায় কিনা, সে কথাই কমিশন জানিয়েছে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। উল্লেখ্য বিশাল অঙ্কের এই বিল নিয়ে এর আগে সরব হয় একাধিক চিকিৎসক সংগঠন এবং চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও তোলপাড় হয়। বিষয়টি নজরে আসে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনেরও। এদিন কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “চিকিৎসকের মৃত্যুতে আমরা বেদনাহত। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টেই আমরা দেখেছি ১৮ লক্ষের বেশি বিল হয়েছে। এই বিল রিভিউ করে দেখা হোক। যদি রোগীর পরিবার ওই হাসপাতালের বিল মিটিয়েও দিয়ে থাকেন, তবু যদি তাদেরকে কিছু টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যায় সে চেষ্টাই কাম্য।” সূত্রের খবর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য কমিশনকে জানিয়েছে, তারা গোটা বিষয়টি মানবিকতার নজরেই দেখছি। বিল পুর্নবিবেচনা করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.