অর্ণব আইচ: কলকাতা হয়ে জঙ্গিদের হাতে নজরদারি ড্রোন ও সেনা ক্যামেরা পাচারের ছক। তার আগেই মধ্য কলকাতা থেকে সেই ড্রোন আর ক্যামেরা ধরা পড়ল শুল্ক দপ্তরের হাতে। শনিবার বিকেলে চারটি ড্রোন ও চারটি ক্যামেরা উদ্ধার করেন শুল্ক দপ্তরের পি এন্ড আই সদর-এর গোয়েন্দারা।
এদিন সূত্র মারফত শুল্ক দপ্তরের গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, চেন্নাই থেকে কলকাতায় একটি কুরিয়্যর সংস্থায় এসে পৌঁছেছে এই চিনা বস্তুগুলি। সেই সূত্র ধরে মধ্য কলকাতার আর এন মুখার্জি রোড থেকে এক ব্যক্তির পিছু নেন গোয়েন্দারা। ম্যাঙ্গো লেনের কাছে আসতেই ব্যক্তিটি বুঝতে পারে যে, সে ধরা পড়ার মুখে। তখনই জিনিসগুলি ফেলে দিয়ে সে পালায়। গোয়েন্দাদের হাতে উদ্ধার হয় চারটি চিনা নজরদারি ড্রোন ক্যামেরা, যার দাম ৬ লক্ষ টাকা। এই ক্যামেরাগুলি দিয়ে অত্যন্ত প্রত্যন্ত জায়গায় নজরদারি করা সম্ভব। বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্তে দিন, এমনকী রাতেও এই ড্রোন দিয়ে নজরদারি করতে পারে জঙ্গিরা।
ড্রোনগুলিতে রয়েছে অত্যন্ত ক্ষমতাশালী ক্যামেরা, যা অনেকটাই উঁচু থেকে যথেষ্ট স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ তুলতে পারে। কোনও মোবাইলের সঙ্গে অ্যাপের মাধ্যমে ওই ফুটেজগুলি তোলা গেলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা পাচার করে দেওয়া যায় বিদেশে। এদিকে, উদ্ধার হওয়া অন্য একটি প্যাকেটে দেখা যায় রয়েছে চারটি ‘অ্যাকশন ক্যামেরা’। গোয়েন্দাদের দাবি, এগুলি সাধারণ ক্যামেরা নয়। সাধারণত যুদ্ধ অথবা জঙ্গি দমন অভিযানে এই ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করে সেনা। এগুলি থাকে সেনা আধিকারিক অথবা জওয়ানদের হেলমেটের উপর। অভিযান অথবা যুদ্ধক্ষেত্রে হেলমেটের ক্যামেরায় স্বয়ংক্রিয় ভাবে উঠে ভিডিও ফুটেজ। একটি মূল শিবির থেকে সেই ভিডিও ফুটেজ দেখে সেনাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। বুঝে নেওয়া যে আশপাশের পরিস্থিতি।
গোয়েন্দাদের মতে, এই ক্ষেত্রেও জঙ্গিরা সেনা অথবা আধা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যাওয়ার কষেছিল। সেই কারণেই চিন থেকে সংগ্রহ করা হয় এই বস্তুগুলি। ইতিমধ্যেই কলকাতা ও চেন্নাইয়ের দুটি কুরিয়ার সংস্থার সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সেই সূত্র ধরেই কারা এগুলি চিন থেকে চোরাপথে নিয়ে এসে কাদের হাতে তুলে দিচ্ছিল, তার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে শুল্ক দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.