ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: কলকাতার সাইবার জালিয়াতের জালে কানাডার (Canada) মহিলা। কানাডায় তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে নিমেষে প্রায় ৩৩ হাজার কানাডিয়ান ডলার হাতিয়ে নেয় ওই সাইবার জালিয়াত। কানাডার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর বিদেশ মন্ত্রক থেকে সিবিআই (CBI) হয়ে সেই অভিযোগ এসে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police)কাছে। পুলিশ জানতে পারে যে, জামতাড়ার আদলে কলকাতায় বসেই বিদেশে জালিয়াতির ফাঁদ পেতেছে জালিয়াত। তাতেই হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা। তদন্ত করে ওই জালিয়াতকে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের সাইবার থানার পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সাইবার জালিয়াতের নাম ইজাজ আহমেদ। সে পূর্ব কলকাতার ফুলবাগান (Phoolbagan) এলাকার বাসিন্দা। কয়েক মাস আগে কানাডার ওই মহিলার কাছে ফোন আসে। এক ব্যক্তি নিজেকে একটি বহুজাতিক সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দেয়। সফটওয়্যার সংক্রান্ত সমস্যার ক্ষেত্রে তাঁকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। মহলা রাজি হলে তাঁর হোয়াটস অ্যাপে (WhatsApp) একটি লিংক পাঠিয়ে অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। তিনি নিজের মোবাইলে ওই অ্যাপটি ডাউনলোড করেন। বুঝতে পারেননি যে, সেটি ‘মিরর অ্যাপ’। তাঁর মোবাইলের দখল নেয় সাইবার জালিয়াত (Cyber Crime)।
মহিলা কানাডার পুলিশের কাছে অভিযোগে জানান, তিনি হঠাৎই তাঁর ব্যাংক থেকে মেসেজ পেতে থাকেন। ক্রমে জানতে পারেন যে, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কয়েক দফায় উধাও হতে শুরু করেছে প্রায় ৩৩ হাজার কানাডিয়ান ডলার। তিনি ব্যাংককে সতর্ক করতে না করতেই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে সেই টাকা চলে যায় একাধিক ই-ওয়ালেটে। কানাডার পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে যে, ভারত থেকে এই ফোন করে জালিয়াতির ফাঁদ পাতা হয়েছে।
এরপরই কানাডার পক্ষ থেকে ইন্টারপোলে জানানো হয়। ইন্টোরপোল থেকে এই তথ্য আসে বিদেশমন্ত্রক ও সিবিআইয়ের (CBI) কাছে। সিবিআই প্রাথমিকভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে যে, কলকাতার এক বাসিন্দার ই-ওয়ালেটের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ওই ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা। লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে এই তথ্য পাঠানো হয় কলকাতা পুলিশকে। তারই ভিত্তিতে লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে ফুলবাগানের ইজাজ আহমেদকে শনাক্ত করে। রবিবার তাকে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
প্রাথমিকভাবে জেরার মুখে ধৃত ইজাজ গোয়েন্দাদের জানায়, সে একাই এই সাইবার জালিয়াতি করেছে। সে আগে একটি ভুয়ো কলসেন্টারে কাজ করত। সেখান থেকেই জামতাড়ার (Jamtara)জালিয়াতদের আদলে এই জালিয়াতি শেখে। যদিও সে কোনও চক্রের সঙ্গে যুক্ত আছে বলে সন্দেহ পুলিশের। সেই চক্রের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.