বাঙালির পয়লা বৈশাখ মানেই নস্ট্যালজিয়া। পোশাক থেকে খাবার, আড্ডা থেকে হালখাতা, সবেতেই থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ। তবে আজকের বাঙালি কি ততটাই উন্মুখ থাকে নববর্ষ নিয়ে? অতীতের স্মৃতিচারণা এবং আগামী নববর্ষের পরিকল্পনা নিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ডিজিটালে লিখলেন তৃণমূলের আইটি সেলের চেয়ারম্যান দেবাংশু ভট্টাচার্য।
পয়লা বৈশাখ মানেই হালখাতা-নতুন জামা। বাড়ি লাগোয়া দোকানে লক্ষ্মী-গণেশ পুজো। দোকানে-দোকানে ঘুরে রসনা-কোল্ড ড্রিঙ্কস খাওয়া। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনের স্মৃতি হাতড়ালেই জ্বলজ্বল করে ওঠে এগুলোই। আমাদের বাড়ির লাগোয়াই ছিল কাকার মুদির দোকান। নববর্ষে ওই দোকানে লক্ষ্মী-গণেশ পুজো হত। স্বাভাবিকভাবেই সকাল থেকে পুজোয় ব্যস্ত থাকতাম বাড়ির সকলে। পাড়ার অনেকে পুজোয় আসতেন। দুপুরে সবাই মিলে বাড়িতেই একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া। এই বচ্ছরকার দিনটাই কী খেতাম সেটা এখন আর মনে নেই। তবে বোধহয় নিরামিষই হত বাড়িতে। মজায় কেটে যেত সময়টা। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পিকচার তখনও অনেকটা বাকি। আসল মজা তো ছিল বিকেল বেলায়। মায়ের হাত ধরে দোকানে-দোকানে হালখাতা করতে যাওয়ায়।
পয়লা বৈশাখে মা নতুন জামা আনতই। তবে সেটা পুজোর মতো ঝাঁ চকচকে নয়। বরং বাড়িতে পরার বারমুডা, স্যান্ডো গেঞ্জি কিংবা হালকা-পাতলা গেঞ্জিই হত নববর্ষের নতুন জামা। সেই জামা পরে মায়ের হাত ধরে বিকেল বেলা শুরু হত হালখাতা। একের পর এক দোকান ঘোরা, কোথাও রসনা তো কোথাও কোল্ড ড্রিঙ্কস খাওয়া, সঙ্গে হাতে মিষ্টির প্যাকেট। এই দিনটায় বিভিন্ন দোকানে কী সব স্কিম দিত! আর মা সেগুলো করতও। তার বিনিময়ে কোথাও মগ দিত, কোথাও বালতি কোথাও বা অন্য উপহার। হাত ভর্তি করে সেসব নিয়ে বাড়ি ফিরতাম। পরদিন থেকে আবার একঘেয়ে জীবন।
এখন পয়লা বৈখাশ আর আগের মতো নেই। বাড়ির লোকের সঙ্গে তো আর সময় কাটানোই হয় না। মঙ্গলবারও তো রাজনৈতিক কর্মসূচি আছে। সেগুলো অবশ্য পয়লা বৈশাখ সম্পর্কিতই। সেখানেই থাকব। দলের লোকের সঙ্গেই দিনটা কেটে যাবে। জনসংযোগ, সভা সেসব করতে করতেই কেটে যাবে দিনটা। আর পাঁচটা দিনের মতোই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.