অভিরূপ দাস: নিহত গোলাপ বিচার না পেলেও বেওয়ারিশ কুকুর তা পেল। পথ কুকুরকে পিষে দিয়ে ছুটে চলে গেল পড়শি। তার বিরুদ্ধে গড়ফা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার (মেজর) দ্বৈপায়ন বিশ্বাস।
দীপাবলি উপলক্ষে দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে ফিরেছেন শুক্রবার। শনিবার সকাল সাড়ে বারোটা নাগাদ কাজে বেরোচ্ছিলেন। আচমকাই গড়ফা মন্দিরপাড়া এলাকায় তাঁর বাড়ির সামনে একটি পথ কুকুরকে পিষে দিয়ে চলে যায় একটি এসইউভি। তারপর? ডেপুটি সুপারের কথায়, “অত্যন্ত মর্মান্তিক দৃশ্য। নীলরতনের সেই কুকুর ছানাকে পিটিয়ে মারার ঘটনাটা মনে পরে গিয়েছিল। মেয়ে বলল, বাবা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।” চাপা দেওয়ার পর ঊর্ধগতিতে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায় চালক। ডেপুটি সুপারের কথায়, কুকুরটির কোমরের উপর দিয়ে চলে গিয়েছে গাড়ির চাকা। মৃত কুকুরটিকে এরপর সড়িয়ে নিয়ে যায় পুরসভার গাড়ি।
বিষয়টি এত সহজে মিটিয়ে দিতে রাজি হননি ডেপুটি সুপার। গড়ফা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। দ্বৈপায়নবাবুর ১৫ বছরের কন্যা শিবাঙ্গী নিজে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। শিবাঙ্গী জানিয়েছে, ডাব্লু বি জিরো টু এফ ৬৫৯৫ নম্বরের সেই গাড়ির চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অভিযোগ পেয়েই এলাকায় আসেন গড়ফা থানার পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নেওয়া হয়। চাপা দেওয়া গাড়ি আর তার মালিককে খুঁজছে পুলিশ। ইতিমধ্যে পিপলস ফর অ্যানিমেলস-এর কর্ণধার সাংসদ মানেকা গান্ধীকেও চিঠি লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দ্বৈপায়নবাবু।
ভারতীয় দন্ডবিধিতে পশু হত্যাকে সম্পত্তি নষ্টের সঙ্গে তুলনা করা হয়। সে কারণে কারও ব্যক্তিগত পোষ্যকে মারলে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদন্ড হতে পারে। কিন্তু রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুর যেহেতু কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, তাই তা মারলে শাস্তি অত্যন্ত সামান্য। আইনের এই ধারাকে বদলাতেই সমস্ত পশুপ্রেমীর এগিয়ে আসা উচিৎ বলে জানিয়েছেন ডেপুটি সুপার। শিবাঙ্গীর কথায়, “রাস্তার কুকুরদের পিষে চলে গেলেও উপযুক্ত শাস্তি প্রাপ্য। দোষীর শাস্তির জন্য আমরা যতদূর যাওয়ার যাব।” প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ওই গাড়ি যিনি চালাচ্ছিলেন তিনি পেশায় অধ্যাপক। একজন শিক্ষিত ব্যক্তি কী করে এ কাজ করলেন তা ভেবে পাচ্ছেন না এলাকার বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.