সুব্রত বিশ্বাস: করোনা আক্রান্ত বিআর সিং হাসপাতালের চিকিৎসক। কোভিড-১৯ থাবা বসিয়েছে হাসপাতালের ইমারজেন্সি ইনচার্জ-এর শরীরে। মঙ্গলবার ওই চিকিৎসকের রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাঁকে পিয়ারলেস হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
অভিযোগ, রেলের সর্ববৃহৎ এই হাসপাতালে চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও বুধবার দুপুর পর্যন্ত আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা কাউকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়নি। শুধু তাই নয়, আর পাঁচটা দিনের মতোই কাজ চলছে। এর জেরে হাসপাতালের এমডি কে ঘেরাও করেন চিকিৎসক থেকে হাসপাতালের সর্বস্তরের কর্মীরা। রেলের মেনস উনিয়ন কর্মীরাও বিক্ষোভে শামিল হওয়ার পাশাপাশি চিফ মেডিক্যাল ডিরেক্টরকে লিখিতভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানান।
অত্যাধুনিক পরিষেবার জন্য পরিচিত রেলের বিআর সিং হাসপাতাল। তবে এখানে করোনার জন্য কোনওরকম সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ করেছেন পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ। অভিযোগ, করোনা টেস্ট করার কোনও ব্যবস্থা নেই, উপযুক্ত পিপিই নেই, এমনকী হাসপাতাল স্যানিটাইজ করাও হচ্ছে না। করোনা সন্দেহে কেউ এলে, আইসোলেশনে ফেলে রাখা হচ্ছে। বাড়াবাড়ি হলে তবেই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে রেফার করা হচ্ছে। এদিকে, করোনা টেস্টের ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নাইসেড, ট্রপিক্যাল, পিজি ছাড়া কেউ টেস্ট কিট পায় না। ফলে রেলকে রাজ্যের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ১৪ এপ্রিল আক্রান্ত মহিলা চিকিৎসক হাসপাতালে আসেন। তারপর শরীর খারাপ হওয়ায় আর আসেননি তিনি। পরে বাড়ি থেকে জ্বর, গলা ব্যথা হওয়ার পর তাঁর লালারস টেস্টের জন্য পাঠানো হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
আক্রান্ত রেলের ওই মহিলা চিকিৎসক শিয়ালদহের রেল আবাসনে থাকেন। ফলে মঙ্গলবার জানাজানির পর আবাসন চত্বরে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রেলের অনেক অফিসার সেখানে থাকেন। এদিন তাঁরা কাজে যোগ দিতে যেমন ভয় পাচ্ছেন, তেমনি অন্য অফিসাররাও সংস্পর্শ এড়াতে অফিসে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিআর সিং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৪ এপ্রিল ও তার আগে আক্রান্ত চিকিৎসক কাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তাদের লিস্ট তৈরি করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে। হাসপাতালের কর্মীদের অভিযোগ, পরিকাঠামো ছাড়াই বিপর্যয়ের মুখে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। মেনস ইউনিয়নের অভিযোগ, পরিকাঠামো ছাড়া একের পর এক হাসপাতাল করোনা হাসপাতাল করা হচ্ছে, হাজার কোটি খরচ করে কোচ আইসোলেশন করা হচ্ছে। তা কোন কাজে লাগছে জানা নেই। চিকিৎসক থেকে হাসপাতাল কর্মীদের সেখানে আটকে রাখা হচ্ছে কাজ ছাড়াই। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.