অভিরূপ দাস: গ্রিলের কাজ করতে গিয়ে চোখে ঢুকে গিয়েছিল লোহার টুকরো। ডানচোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ চলে গিয়েছিল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এসে ধরা পড়ল, চোখ শুধু নয়, নাকেও গেঁথে রয়েছে ইস্পাত খণ্ড। কোভিড আবহে আড়াই ঘন্টার জটিল অস্ত্রোপচার করে মুর্শিদাবাদের শাহুল শেখের প্রাণ ফিরিয়ে দিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Calcutta Medical College Hospital) ENT সার্জন ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায়।
মুর্শিবাদের হরিহরপাড়ার বছর একুশের শাহুল গ্রিল কারখানার কর্মী। লোহার পাত কাটার কাজ করতে গিয়ে আচমকাই মেশিনের ব্লেড ভেঙে গিয়ে ঢুকে যায় মুখে। বাঁ-দিক দিয়ে ইস্পাত খণ্ড ঢুকে ডান চোখের ভিতরেও আঘাত করেছিল। রক্তপাত হয়েছিল প্রচুর। সেটা ২৮ আগস্ট। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ওখানে কাটা জায়গা সেলাই করে দেওয়া হয়। চোখে ঢুকে যাওয়া পাতের যেটুকু অংশ বেরিয়েছিল, তাও বের করে দেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিক শুশ্রূষার পর, রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অফ অপথ্যালমোলজিতে (RIO)রেফার করা হয়।
৩১ আগস্ট RIO’তে আসেন শাহুল। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি নেই বললেই চলে। তবে অবাক হওয়ার বিষয় ছিল অন্য। বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তিও ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে। সন্দেহ হওয়ায় সিটি স্ক্যান করেন আরআইও-র চিকিৎসকরা। তাতে ধরা পড়ে, বাইরে বেড়িয়ে থাকা ইস্পাতের খণ্ডটুকুই বের করেছেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। নাকের ভিতর এখনও ঢুকে রয়েছে একটা ইস্পাত টুকরো।
দ্রুত শাহুলকে রেফার করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ENT বিভাগে। কলকাতা মেডিক্যাল এখন রাজ্যের অন্যতম কোভিড হাসপাতাল। সেখানে নিয়ে এসে প্রথমেই কোভিড টেস্ট করা হয় শাহুলের। এরপর গত বুধবার আড়াই ঘন্টার এক জটিল অস্ত্রোপচারে নাক থেকে বের করা হয় ওই ইস্পাতের টুকরো। ENT সার্জন চিকিৎসক ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”ইস্পাতের টুকরোটি বাঁ-দিকের চোখের অক্ষি বলয়ের উপরের দিকে ঢুকে ছিল। এথময়েড সাইনাস পর্যন্ত বিস্তৃত থাকায় নাক থেকে রক্তক্ষরণ থামছিল না। অস্ত্রোপচার শেষে এখন রোগী সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.