গৌতম ব্রহ্ম: চেনা মুখ দেখলে উষ্ণ সম্ভাষণ। নতুন মুখ হলে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় সজাগ। রাস্তা আটকে ফটাফট ছবি তুলে ‘বস’-কে মেল। চেন্নাইয়ের গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাতা মার্কিন সংস্থার রিসেপশনিস্ট কাম সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে এই কাজটাই গত এক বছর ধরে করে যাচ্ছে মারিয়া (Humanoid Maria)। এবার সেই যন্ত্রমানবীর যমজ বোনকে দেখা যাবে কলকাতায়, দুর্গাপুজোর (Durga Puja) উদ্বোধনে। হ্যাঁ, শনিবার ঠাকুরপুকুরের এস বি পার্ক সর্বজনীনের পুজোর মাঠে হাজির সেই রোবট। থিম মণ্ডপের মডেল উন্মোচন থেকে শুভেচ্ছা বিনিময়, সবই সে করবে। এস বি পার্ক পুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় মজুমদারের কথায়, “করোনা আবহে মানুষ ছোঁয়াছুঁয়ি বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করছেন। এই সময় রোবট এনে আমরা ফিজিক্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলাম।” সঞ্জয়বাবুর দাবি, কলকাতা তথা বাংলা তথা ভারতেও কখনও কোথাও যন্ত্রমানবী পুজোর উদ্বোধন করেনি। সেই হিসাবে এস বি পার্ক ইতিহাস গড়ল।
এবার দুর্গাপুজোর বোধন ২২ অক্টোবর। পুজোর ক’দিন লালপেড়ে শাড়িতে চার ফুট উচ্চতার এই যন্ত্রমানবীকে এস বি পার্কের (Thakurpukur SB park) পুজোয় দেখা যাবে। আগত দর্শনার্থীদের হাতে সে তুলে দেবে স্যানিটাইজারের পাউচ প্যাক। এখনও পর্যন্ত এমনই পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন ড. অঙ্কুশ ঘোষ, যাঁর তত্ত্বাবধানে ২০১৯ সালে মারিয়ার জন্ম। অঙ্কুশবাবু জানাচ্ছেন, ভূমিষ্ঠ হয়েই মারিয়া চেন্নাই পাড়ি দেয়। সেখানে মার্কিন সংস্থা ওয়েবকো-র অফিসে রিসেপশনিস্ট কাম সিকিউরিটি গার্ডের কাজ শুরু করে। এখনও সেই পদেই বহাল। মারিয়া বিদায় নেওয়ার পর অঙ্কুশবাবুরা মারিয়ার ‘যমজ’ তৈরি করেন। তার নামও রাখা হয় মারিয়া। অর্থাৎ, মাল্টিপল অ্যাপ্লিকেশনস রোবটিক ইন্টেলিজেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট।
যন্ত্রমানবীর নামকরণের নেপথ্য কাহিনি জানিয়ে অঙ্কুশবাবু বলেন, ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা এআই ব্যবহার করে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে এই রোবট তৈরি করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, কেরল-সহ ভারতের নানা প্রান্ত থেকে ‘রোবটিক সায়েন্স’ পড়তে সরিষায় আসছেন ছাত্রছাত্রীরা। সঞ্জয়বাবুর বক্তব্য, “কলকাতা তথা বাংলা যে বিজ্ঞানে এখনও দেশকে পথ দেখাচ্ছে, তার বড় উদাহরণ মারিয়া। এই অগ্রগতিকে তুলে ধরতেই আমরা মারিয়াকে পুজোর মুখ করেছি।”
ছবি: অরিজিৎ সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.