কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: হোটেল খাবার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সে দেশের সরকার চাইছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদেশি পর্যটকদের দায়দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে। চাইছে পাততাড়ি গুটিয়ে ফিরে যাক বিদেশিরা। এমতাবস্থায় সুদূর মেক্সিকোয় দিন কাটছে সল্টলেকের দুই প্রবীণের। সঙ্গী বলতে একজনের ৬৪ বছরের স্ত্রী। আরেকজনের ৬৮ বছরের স্বামী । আর সঙ্গী বলতে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এবং নানাবিধ অসুখ। প্রবাসে থাকাকালীন দৈব যে এভাবে ছলনা করবে, তা জানতে পারলে মেক্সিকোমুখোই হতেন না এই দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।
এঁরা সল্টলেকের CL ব্লকের বাসিন্দা। বৃদ্ধের নাম সন্দীপ সেন, বৃদ্ধা স্বাতী সেন। মেক্সিকো গিয়েছিলেন বেড়াতে । মার্চের শেষ সপ্তাহে ফেরার কথা ছিল। আচমকা লকডাউনের ঘোষণা, মেক্সিকোয় আটকে পড়া। মেক্সিকোয় বসে সন্দীপবাবু জানিয়েছেন, “ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্য সরকারকে ই-মেল মারফত জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সদুত্তর পাইনি। এখন এদেশের সরকার বলছে, বিদেশিরা যত দ্রুত সম্ভব দেশ ছাড়ুক।” অন্যদিকে, আমেরিকাও বলছে, তাদের দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার পর যেটুকু বিমান পরিষেবা চালু আছে, সেটুকুও বন্ধ দেওয়া হবে ।
এই অবস্থায় প্রবল উদ্বেগে দিন কাটছে বলে জানিয়েছেন এই বৃদ্ধ। সন্দীপবাবুর পুত্র সৌম্য সেন বলছেন, “আমরা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে এই সমস্যার কথা জানিয়ে সুরাহার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কোনও সদুত্তর আসেনি।” সন্দীপ বাবুর বক্তব্য, তাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান। ওষুধের জোগান ফুরিয়ে গিয়েছে। তার ফলে সমমানের ওষুধ কিনে তাঁদের খেতে হচ্ছে মেক্সিকোতে। মঙ্গলবার ভারতে লকডাউনের মেয়াদবৃদ্ধির ঘোষণা আরও উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে এই প্রবীণ দম্পতি এবং তার পরিবারের । কীভাবে, কবে দেশে ফিরবেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। এখন একটাই প্রার্থনী, এই দুঃসময় কেটে যাক দ্রুত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.