Advertisement
Advertisement
Fake birth certificate

বাংলায় ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরির চক্র! নেপথ্যে বহু এজেন্ট, চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে

এজেন্টদের সন্ধানে কলকাতার আশপাশে তল্লাশিও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Fake birth certificate making in bengal sensational information in hands of police
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:May 20, 2025 7:23 pm
  • Updated:May 20, 2025 7:23 pm  

অর্ণব আইচ: ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র ব্যবহার করে পাসপোর্টের আবেদন। তাতেই কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানইজেশনের হাতে গ্রেপ্তার বেশ কয়েকজন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে এল কোঁচো খুঁড়তে কেউটে! উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র। গোয়েন্দাদের দাবি, এর পিছনে রয়েছে কিছু এজেন্ট।

ভুয়ো জন্ম শংসাপত্রের গোড়া খুঁজতে হাসপাতাল ও পুরসভাগুলিতে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাতেই দেখা যাচ্ছে, কারও জন্ম বিহারে। বড় হয়ে ওঠা বা পড়াশোনাও সেই ভিনরাজ্যেই। কিন্তু জন্ম শংসাপত্র কলকাতার। আবার কেউ বা উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। পড়াশোনা দিল্লিতে। কিন্তু পাসপোর্টের আবেদন করার সময়ই সে যে জন্ম শংসাপত্রটি হাজির করে, সেটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার পঞ্চায়েতের। আবার বাংলাদেশের বাসিন্দাদের জন‌্যও ভুয়ো নথি তৈরি করিয়ে দেখানো হয়েছে যে, তাদের জন্ম কলকাতা বা আশপাশের জেলা বা কমিশনারেটে। এরকম একের পর এক নথি পুলিশের সামনে আসছে।

Advertisement

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক মাসের মধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকা, কলকাতা ও আশপাশের জেলা থেকে পাসপোর্ট চক্র ধরা পড়ার পর তৎপর হয়েছে কলকাতা পুলিশ ও জেলা পুলিশ। প্রত্যেকটি পাসপোর্টের আবেদনের সঙ্গে পেশ করা নথিপত্রগুলি ভাল করে পরীক্ষা করতে শুরু করেছে পুলিশ। নথিগুলির মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জন্ম শংসাপত্রকে। কিন্তু এই জন্ম শংসাপত্রকে ভরসা করছেন না পুলিশ আধিকারিকরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জন্ম শংসাপত্রের কপি পাঠানো হচ্ছে পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগে।

যেমন, সম্প্রতি মহম্মদ কুরাতুল্লাইন আজাহার নামে একবালপুরের বাসিন্দা এক যুবকের জন্মের শংসাপত্র দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। কলকাতা পুরসভার শংসাপত্রে ২৬.৩.২০০৭ সালে জন্ম বলে দেখানো হয়। তা দেখে গোয়েন্দা পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশের পক্ষে পুরসভার চিফ মিউনিসিপ‌্যাল হেলথ অফিসারকে মেল করে জানতে চাওয়া হয়। ওই আধিকারিক পুলিশকে উত্তর দেন যে, কোনও বার্থ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়নি। আবার সন্দেহজনক জন্ম শংসাপত্র পুলিশের পক্ষে পাঠানো হচ্ছে হাসপাতালেও, যেখানে ওই ব‌্যক্তির জন্ম হয়েছে বলে জানানো হয়েছে নথিতে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে জন্ম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হলে আর রেয়াত করছে না পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গেই মামলা করা হচ্ছে ওই ব‌্যক্তির বিরুদ্ধে।

গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতাল ও পুরসভার সূত্র ধরে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, এই ভুয়ো শংসাপত্র তৈরির পিছনে রয়েছে এজেন্টদের চক্র। এজেন্টরা শুধু ভুয়ো শংসাপত্র-সহ অন‌্যান‌্য ভুয়া নথি তৈরির জন‌্য এক থেকে দেড় লাখ টাকা নিচ্ছে বলেও খবর। অভিযোগ উঠেছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন নিজেদের ডেরায় ভুয়ো নথি তৈরির ‘কারখানা’ও তৈরি করে ফেলেছে। শুধুমাত্র একটি কম্পিউটারের সাহায্যে সফটওয়‌্যার ব‌্যবহার করে তৈরি করছে ওই ভুয়ো নথিগুলি। গোয়েন্দাদের মতে, ওই এজেন্ট চক্রকে ধরতে পারলেই ভুয়ো নথি তৈরির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ওই এজেন্টদের সন্ধানে কলকাতার আশপাশে তল্লাশিও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement