অর্ণব আইচ এবং অভিরূপ দাস: নিউরো সায়েন্সের (Institute Of Neurosciences Kolkata) কার্নিশ থেকে ঝাঁপ দিয়ে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করল মৃতের পরিবার। মৃত সুজিত অধিকারীর পরিবারের দাবি, বেসরকারির হাসপাতালের তরফে যার উপর রোগীর দেখভালের দায়িত্ব ছিল, তিনি দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর অবহেলার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কড়া নজরেই রাখা হয়েছিল সুজিতকে। কিন্তু কার্যত নার্স এবং নিরাপত্তারক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে তিনি কার্নিশে পৌঁছে গিয়েছিলেন।
যত সময় গড়াচ্ছে ততই নতুন-নতুন তথ্য উঠে আসছে নিউরো সায়েন্সের (INK) কার্নিশ কাণ্ড সংক্রান্ত। জানা গিয়েছে, পেশায় লরির চালক সুজিত নেশাসক্ত ছিলেন। মদ ছাড়া দিন চলত না তাঁর। সুজিতের প্রাণ বাঁচাতে সেই মদেরও আশ্রয় নিয়েছিল হাসপাতাল। কর্তৃপক্ষের তরফে কিনে আনা হয়েছিল, হুইস্কির বোতল। কার্নিশ ছেড়ে ওয়ার্ডে ফিরে এলে তাঁকে ওই বোতল দিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নার্সরা। কিন্তু তাতেও মন ফেরেনি বছর আটত্রিশের সুজিতের।
প্রতিদিন মদ্যপান করতেন সুজিত। কিন্তু গত তিনদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় মদ পাননি তিনি। কার্নিশে চড়ে বসার পরই চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়েছিল, ‘অ্যালকোহল উইথড্র সিনড্রোমে’ ভুগছেন সুজিত। এরকম অবস্থায় আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি হয়। তাই সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীরা কিনে এনেছিলেন হুইস্কির বোতল। নার্সরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, উঠে এলে বোতল দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কোনও কথাই শোনেনি সুজিত। হাসপাতালের এক কোনায় এখনও পড়ে রয়েছে সেই মদের বোতল।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে আটতলার জানলা দিয়ে কার্নিশে চলে যান লেকটাউনের বাসিন্দা সুজিত অধিকারী। নজরে পড়ে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। দেখা যায় কখনও কার্নিশে উঠে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ওই যুবক। আবার কখনও পা ঝুলিয়ে বসে পড়ছেন। মুহূর্তের মধ্যেই আবার ভঙ্গিমা বদল করে হাঁটু ভাঁজ করেও বসতে দেখা যায় কার্নিশে। হাত উঁচিয়ে কথাবার্তা বলার চেষ্টা করতেও দেখা যায় তাঁকে। রোগীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে তিনি নামতে রাজি হননি। পরে সেখান থেকে ঝাঁপ দিলে মৃত্যু হয় রোগীর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.