কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে অশান্ত দমদমের আদিত্য অ্যাকাডেমি। মঙ্গলবার স্কুলের গেট আটকে অভিভাবকদের বিক্ষোভের জেরে শিকেয় উঠল পঠনপাঠন। বৈঠক করে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হলেও, সেই কাজ বিশেষ এগোয়নি।
দমদম নাগেরবাজার চত্বরে আদিত্য অ্যাকাডেমি বেশ নামী স্কুল। ভর্তির ফি কিম্বা পড়াশোনার খরচ – কোনওটাই বিশেষ কম নয়। সেই খরচই আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাও আবার আচমকা, অভিভাবকদের অজ্ঞাতসারে। যেখানে ভর্তির জন্য ৪০ হাজার টাকা দিতে হত, এখন তা দ্বিগুণ দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। তারওপর মাসিক টিউশন ফি-ও অতিমাত্রায় বাড়ানো হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, আগে ৩ মাসের জন্য যে টাকা দিতে হত, এখন মাসে মাসে সেই টাকা দিতে হবে বলে জানাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সন্তানদের এই স্কুলে পড়ানো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে অভিভাবকদের একাংশ। উলটোদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলে স্মার্ট ক্লাস তৈরি হচ্ছে। তাই বাড়তি ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত। অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করেই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁরা এবিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত। স্কুলের এই বিবৃতিতে আবার অভিভাবকদের দাবি, ফি বৃদ্ধি নিয়ে একবার সামান্য কিছু আলোচনা হলেও, তার অঙ্ক ঠিক করে বলা হয়নি। আর তাতেই অভিভাবকদের এত সমস্যা। ৪০ হাজারের অঙ্ক একলাফে বেড়ে ৮০ হাজার হলে, তা চূড়ান্ত অসুবিধার। মঙ্গলবার বিক্ষোভের জেরে পড়াশোনা প্রায় হয়নি আদিত্য অ্যাকাডেমিতে। বুধবার অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হবে বলে আশ্বাস কর্তৃপক্ষের।
[ক্লাসরুমে ‘গণচুম্বন’, বহিষ্কৃত হাওড়ার নামী স্কুলের ৬ ছাত্রছাত্রী]
অতিরিক্ত ফি নিয়ে শিক্ষা নয়। গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত বেসরকারি স্কুলগুলিকে নিয়ে টাউন হলের বৈঠকে রীতিমতো একথা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, ফি-র নামে কোনও বাড়তি টাকা নেওয়া চলবে না। ভাল স্কুলে শিক্ষার নামে অভিভাবকদের উপর যেন খরচের বোঝা না চাপানো হয়। এসব কড়াভাবেই বলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই বার্তায় যে বিশেষ কাজ হয়নি, এদিন আদিত্য অ্যাকাডেমির ঘটনাই তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.