দীপঙ্কর মণ্ডল: লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। যাঁদের আছে, প্রায় সবারই বেতন কমেছে। এহেন পরিস্থিতিতে বেসরকারি স্কুলের ফি নিয়ে ডামাডোল বাড়ছে বৈ কমছে না। শহর ও শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকরা। কেউ বলছেন, ফি কমাতে হবে। কেউ বলছেন এই সময়ে গাড়ি, কম্পিউটার, খেলাধুলো, সংস্কৃতি প্রভৃতি বিষয়ে নির্ধারিত যে ফি নেওয়া হয় তা মকুব করতে হবে। স্কুলগুলির বক্তব্য, শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের বেতন তো দিতেই হবে। এছাড়াও লকডাউন উঠে গেলে করোনা সতর্কতার জন্য যে বাড়তি খরচ, ফি না দিলে তা আসবে কোথা থেকে। সূত্রের খবর, গত তিন মাসে ৫০ শতাংশ অভিভাবক ফি জমা দেননি। জুলাই মাস পর্যন্ত তাদের জন্য অপেক্ষা করবে স্কুলগুলি। ফি জমা না পড়লে স্কুলগুলি ধরে নেবে নির্দিষ্ট ছাত্রছাত্রী এই শিক্ষাবর্ষে আর পড়বে না। এই আবহে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বেসরকারি স্কুলগুলি চিঠি পাঠিয়েছে।
সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে যে ফি নেওয়া হয়েছে সেই ফি বহাল থাকবে চলতি শিক্ষাবর্ষেও। রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, লকডাউন শুরু হওয়ার পর গত দু-মাসে ফি জমা পড়েছে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ। সম্প্রতি দমদম, রথতলা, কামারহাটি প্রভৃতি জায়গায় ফি কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অভিভাবকরা। গার্ডেন হাই, অ্যাডামাস, ডিপিএস নিউটাউন প্রভৃতি স্কুলে ফি বেড়েছে। অ্যাডামাসের তরফে যদিও জানানো হয়েছে বর্ধিত ফি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। উলটোদিকে হাওড়ার লিলুয়ার একটি স্কুল, সেন্ট জোসেফ, ঠাকুরপুকুরের একটি স্কুল ফি কমিয়েছে।
আইসিএসই স্কুলের সর্বভারতীয় সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক নবারুণ দে জানিয়েছেন, হাতে গোনা কয়েকটি স্কুল ছাড়া রাজ্যের কোন আইসিএসই স্কুলে ফি বাড়ানো হয়নি। সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের প্রিন্সিপাল নবারুনবাবুর বক্তব্য, “লকডাউনে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত এটা ঠিক। কিন্তু পাশাপাশি অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে অনলাইনে যাঁরা ক্লাস নিচ্ছেন বা যে সাফাই কর্মী কাজ করছেন, এমন হাজার-হাজার মানুষের বেতন হয় স্কুলের ফি থেকে। ঠিক সময়ে ফি জমা না পড়লে আমরা তাদের বেতন কী করে দেব।” তিনি বলেন, “হাতেগোনা কয়েকটি স্কুল ছাড়া রাজ্যের সমস্ত বেসরকারি স্কুল গতবছরের ফি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারপরও যদি অভিভাবকরা টাকা না দেন তাহলে তা দুর্ভাগ্যের। আমরা জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করব। তারপর ফি জমা না পড়লে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.