নিজস্ব সংবাদদাতা, বারাকপুর: ঝাঁ চকচকে আনকোরা ফ্ল্যাটবাড়ি৷ কিন্তু দিনদিন হেলে পড়ছে৷ যেন পিসার হেলানো টাওয়ার! ভয়ে বাড়ির লোকের চোখের ঘুম উধাও৷ কখন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে, সে আতঙ্কে রাতে তাঁরা দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না৷
একটা নয়৷ বরানগর পুর এলাকায় বেশ ক’টা বহুতলের এখন এই দশা! যেমন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষনগর বঙ্গলক্ষ্মী বাজারের ন’পাড়ায় নতুন আবাসনটি৷ দূর থেকে দেখলে মনে হবে, হেলানো মিনার৷ ভুল ভাঙিয়ে দিলেন বাসিন্দারা৷ “তৈরি হয়েছিল সোজাই৷ যত দিন যাচ্ছে, আস্তে আস্তে হেলে পড়ছে৷ কোনও দিন হয়তো সবশুদ্ধ ভেঙে মাটিতে পড়বে৷”– মন্তব্য এক আবাসিকের৷” আবার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়ায় বিদ্যায়তন সরণির এক বহুতল তো হেলতে হেলতে লাগোয়া ফ্ল্যাটবাড়িটির কার্নিশ ছুঁয়ে ফেলেছে! এত ঘেঁষাঘেঁষি করে দু’টো বাড়ি মাথা তুলল কী ভাবে?
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট প্রোমোটার জহর দেব ওরফে দুলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে পুরসভায়৷ পুরসভার তরফেও দুলুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ রুজু হয়েছে৷ দুলু আপাতত গ্রেপ্তার হলেও হেলে পড়া বাড়ি সোজা করার রাস্তা বাসিন্দাদের জানা নেই৷
আর একটু দেখা যাক৷ ঢিলছোড়া দুরত্বে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর রাজকুমারী মুখোপাধ্যায় রোড৷ সেখানে এক ফ্ল্যাটবাড়ির মানুষজন ইদানীং জোরে বাতাস বইলে ইষ্টনাম জপতে থাকেন৷ টপ ফ্লোরের এক আবাসিকের কথায়, “বিল্ডিং ক্রমশ ঝুঁকে পড়ছে৷ মনে হচ্ছে, কাঁচামালেই গণ্ডগোল৷”
১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাতা মনমোহিনী নগরেও একটি বহুতলের হাল খারাপ৷ এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেন বরানগরের পুরসভার চেয়ারপার্সন অর্পণা মৌলিক স্বয়ং৷ বাসিন্দাদের আক্ষেপ, “প্রোমোটার তো ফ্ল্যাট বানিয়ে টাকা নিয়ে চলে গিয়েছে! বাড়ি ভেঙে পড়লে দায় কে নেবে?”
এমতাবস্থায় ওঁরা চাইছেন, পুরসভা প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিক৷ কিন্তু এ সম্পর্কে পুর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার অভিযোগও শোনা যাচ্ছে৷ চেয়ারপার্সন অর্পণাদেবী যদিও বলছেন, “এমনটা আমিও শুনেছি৷ তবে পুরসভায় কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি৷ পড়লে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.