অভিরূপ দাস: এ যেন বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেড়ো। ফেস রিকগনিশন বায়োমেট্রিক সিস্টেম চালু হওয়ার দিনেই কলকাতা পুরসভায় জালিয়াত। বিনা বাধায় প্রবেশ করে খেলনার দোকানের মালিকের হাজার হাজার টাকা নিয়ে উধাও গেল ওই ব্যক্তি!
মঙ্গলবার এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর খোঁজ শুরু হয়। কিন্তু পুরসভার কর্মীরা আটক করার আগেই চোখে ধুলো দিয়ে সে পগাড় পার। শেষমেশ সিসিটিভি ঘেঁটে পাওয়া গিয়েছে ছবি। সে ছবি দিয়েই নিউমার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এখনও নাম জানা যায়নি ওই ব্যক্তির।
ঘটনার শুরু দুপুর দু’টো নাগাদ। বাগরি মার্কেটে পেল্লায় খেলনার দোকান হীতেশ বনশালির। তাঁর কথায়, ‘‘দুপুরে দোকানে আসে এক ব্যক্তি। নিজেকে ইলেকট্রিক অফিসের কর্মচারী বলে পরিচয় দিয়ে দোকানে এসে বলে, সাত হাজার ছ’শো টাকা ইলেকট্রিক বিল বাকি। এখনই না দিলে আজ রাতেই লাইন কেটে দেবে।’’ ভয় পেয়ে যান দোকানের মালিক। ‘‘লাইন কেটে দিলে আবার ইলেকট্রিক অফিসে দৌড়াদৌড়ি।’’ হীতেশের কথায়, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তির হাতে টাকা তুলে দিই।’’ দোকানের কর্মচারী রাহুল গুপ্তকে নির্দেশ দেন ওই ব্যক্তির সঙ্গে যেতে। ধর্মতলায় এসে সিইএসসি অফিসে যাওয়ার বদলে রাহুল গুপ্তকে নিয়ে এসএন ব্যানার্জি রোডে এসে পুরসভার দোতলায় উঠে পড়ে ওই ব্যক্তি। বলে, ‘‘একটু অপেক্ষা করুন। আমি টাকা জমা দিয়ে আসছি।’’ এরপরেই চম্পট দেয় ওই জালিয়াত। মিনিট চল্লিশ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর সন্দেহ হয় রাহুলের।
মঙ্গলবার দুপুরে মাথায় হাত রাহুল গুপ্তর। বলেন, ‘‘পুরসভার কর্মচারীদের জিজ্ঞাসা করি এখানে ইলেকট্রিক বিলের টাকা কোথায় জমা দেওয়া হয়। তাঁরা জানান, এটা কলকাতা পুরসভা। এখানে এধরনের বিলের টাকা জমা নেওয়া হয় না।’’ জালিয়াতি হয়েছে আন্দাজ করেই সিসিটিভি খতিয়ে দেখেন পুরসভার কর্মীরা। দেখা যায়, কালো জ্যাকেট, কালো টি-শার্ট পরে ওই ব্যক্তি টাকা পকেটে ঢুকিয়ে অন্য সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছে।
এ ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে পুরসভার নিরাপত্তা নিয়ে। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে চ্যাটবট সিস্টেম চালু হয়েছে কলকাতা পুরসভায়। কারও সঙ্গে দেখা করতে গেলে আগে থেকে অ্যাপয়নমেন্ট নিতে হয়। দালাল চক্রকে ঠেকাতে শুরু হয়েছে ফেস রিকগনিশন বায়োমেট্রিক সিস্টেম। তারপরেও যেভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের নাকের ডগা দিয়ে বহিরাগতরা ঢুকছে তাতে চিন্তিত পুর আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.