রাহুল চক্রবর্তী: ১২ আগস্ট রেস্টুরেন্টে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছিল সৌমেন আর পাপাই। ২ সেপ্টেম্বর জন্মদিন ছিল সৌমেনের। পরিকল্পনা ছিল কয়েকদিনের মধ্যেই সৌমেনের জন্মদিনের পার্টি হবে। আবারও সেলিব্রেশন হবে। কিন্তু সেই ইচ্ছেটা আর পূরণ হল না। সৌমেন আর নেই। বন্ধু পাপাই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে সিএমআরআই হাসপাতালে।
মাঝেরহাট উড়ালপুল কেড়েছে সৌমেন বাগের প্রাণ। বেহালা শীলপাড়ার বাসিন্দা ২৮ বছরের সৌমেন একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করত। সঙ্গে চলত প্রাইভেট টিউশন। অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিল সরশুনার বাসিন্দা পাপাই রায়। পাপাই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী।
[পোস্তার পর মাঝেরহাট, পরপর ব্রিজ বিপর্যয়ে দায়ের জনস্বার্থ মামলা]
গত রবিবার সৌমেনের জন্মদিন ছিল। পাপাই রায়, মৃন্ময় ভৌমিকরা ঠিক করেছিল কয়েকদিনের মধ্যে সৌমেনের জন্মদিনে নামী রেস্টুরেন্টে সেলিব্রেশন হবে। আর ১ জানুয়ারি জন্মদিন পাপাইয়ের। ফলে, বছর শুরুর উদযাপন পাপাইয়ের জন্মদিনের সেলিব্রেশনের সঙ্গে একাকার করারও পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বাদ সাধল মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়। সিএমআরআই হাসপাতালে বন্ধু মৃন্ময় ভৌমিক বলল, “সৌমেন, পাপাই খুব ভাল বন্ধু ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে সৌমেন-পাপাইকে একসঙ্গে দেখি। ওরা সিনেমা দেখতে গিয়েছিল। তারপর বই কিনতে দু’জন কলেজ স্ট্রিট যাবে বলে আমায় জানিয়েছিল। কিন্তু বাসে উঠে শুনি ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। বেহালা এলাকার ওই ব্রিজ দিয়েই দু’জনের যাওয়ার কথা ছিল। এটা ভেবেই শিউরে উঠলাম। ওদের ফোনে না পেয়ে আশঙ্কা আরও বেড়ে গেল।”
[ব্রিজ ভাঙার জের, ঘুরপথে চলছে দক্ষিণ শাখার একাধিক লোকাল ট্রেন]
তারপর সব কাজ ফেলে বন্ধুর খোঁজে ছুটে এলাম সিএমআরআইতে। ‘‘এখানে এসে জানতে পারলাম পাপাই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। কালো রঙের জামাটা দেখেই পাপাইকে চিনতে পারি। আর এখান থেকেই খবর পেলাম সৌমেন নেই।’’– বললেন মৃন্ময়৷ সৌমেন আর পাপাইয়ের দেখা হবে না। বন্ধুদের কাছ থেকে সৌমেনকে কেড়েছে মাঝেরহাট ব্রিজ। আর পাপাই যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে, ঈশ্বরের কাছে আকুলভাবে এই আবেদন জানাচ্ছে বন্ধু মৃন্ময় ও বাকি সমস্ত বন্ধুরা৷
[ব্রিজ ভাঙার সঙ্গে মেট্রো প্রকল্পের কোনও যোগ নেই, প্রাথমিক রিপোর্টে জানাল ‘রাইটস’]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.