কলহার মুখোপাধ্যায়: যেন সিনেমার দৃশ্য। দমদম বিমানবন্দরের ইন্টারন্যাশনাল লাউঞ্জ। এয়ার এমিরেটসের ইকে ৫৭০ বিমানটি সবে দুবাই থেকে উড়ে এসেছে। সকালের ব্যস্ততা। চেক ইনের তাড়া। এদিক ওদিক হাঁটাহাঁটি করছেন যাত্রীরা। এর মধ্যেই সেই দৃশ্য! হাতে একটি হেলথ ড্রিংকের প্যাকেট নিয়ে দুলকি চালে এগিয়ে চলেছেন এক ব্যক্তি৷ এয়ার এমিরেটসের বিমানে কলকাতা এসেছেন৷ সঙ্গে থাকা ব্যাগটার চেহারাও নিছক মন্দ নয়৷ কিন্তু এ কী! নিরাপত্তারক্ষীদের দেখেই কেমন যেন একটু চমকে গেলেন তিনি৷ এবার একটু থেমে কিছুটা জোরে হাঁটতে শুরু করলেন৷ এখানেই সন্দেহ৷ তেড়ে গিয়ে ওই ব্যক্তির রাস্তা আটকালেন দুই নিরাপত্তাকর্মী৷
কিন্তু, তারপর যা ঘটল তাতে চক্ষু চড়কগাছ এয়ারপোর্ট ইনটেলিজেন্স অথরিটির কর্তাদের৷ ওই ব্যক্তিকে আটক করার পর তাঁকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করা হয়। বিশেষ অস্বাভাবিকত্ব কিছু লক্ষ করা যায়নি। এর মাঝেই এয়ারপোর্ট ইন্টেলিজেন্স অথরিটির আধিকারিকরা লক্ষ করেন ওই ব্যক্তি হাতে থাকা হেলথ-ড্রিঙ্কের প্যাকেটটি বারবার আড়াল করতে চাইছেন। এরপর তাঁর ব্যাগ খুলতেই উদ্ধার হয় আরও হেলথ ড্রিংকের প্যাকেট৷ এরপর ওই হেলথ ড্রিংকের প্যাকেটটি খুলে পরীক্ষা করতেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। দেখা যায় ওই হেলথ ড্রিংকের প্যাকেটে করে প্রচুর পরিমাণে সোনার গুঁড়ো পাচার করছিলেন ওই ব্যক্তি৷ ওই ব্যক্তির কাছ থেকে মোট তিনটি হেলথ ড্রিংকের প্যাকেট মেলে৷ সবক’টির মধ্যেই ছিল গুঁড়ো সোনা৷
তিনটি প্যাকেট থেকে মোট ৯৭০ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। এর আগেও সোনা পাচারের একাধিক ফন্দি ফাঁস করেছেন এয়ারপোর্ট ইন্টেলিজেন্স কর্তারা। শুধু সোনা নয়, একাধিক মাদক পাচারের ঘটনা সামনে এসেছে দমদম বিমানবন্দরে। এর আগে সোনা পাচারের যে ঘটনাগুলি সামনে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে কখনও ব্যাগের মোড়কে। কিংবা ল্যাপটপের ভিতর। অথবা জুতোর মধ্যে। সোনা পাচারে ধৃত ওই ব্যক্তিতে শুল্ক দপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত সোনার গুঁড়ো দিয়ে একটি বাটও তৈরি করেছেন শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.