ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: ২৯ দিনের একরত্তির সঙ্গে হাসপাতালে থাকতে চেয়েছিলেন মা। কিন্তু হাসপাতাল সাফ জানিয়ে দেয় অসম্ভব। নিওনাটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (NICU) মা-কে রাখা যাবে না। কে জানত সেই সিদ্ধান্তে এত বড় বিপদ ঘটে যাবে। রাত আড়াইটেয় মা-কে জানানো হল মারা গিয়েছে শিশু। সন্তান হারিয়ে মায়ের আক্ষেপ, “আমি থাকলে হয়তো এমনটা হত না।” গোটা ঘটনায় মালদহের দিশারী হেলথ পয়েন্টকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন।
ঘটনা ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের। মকবুল ইসলাম নামে ২৯ দিনের ওই মৃত সদ্যোজাতর (New born baby) বাবা অভিযোগ করেছেন কমিশনে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর তাঁর ২৯ দিনের সন্তানের একটি সমস্যা হয়েছিল। ছোট্ট একটা অস্ত্রোপচারের জন্য শিশুটিকে ভরতি করা হয়েছিল মালদহের দিশারী হেলথ পয়েন্টে। শিশুটির মায়ের অভিযোগ, অত ছোট বাচ্চা মা-কে ছাড়া থাকতে পারবে না। বারবার বলা সত্ত্বেও হাসপাতাল আমায় থাকার অনুমতি দেয়নি। ৩১ অক্টোবর রাত ১০টা নাগাদ বাচ্চাকে দুধ খাইয়ে বেরিয়ে আসেন মা। তারপর রাত আড়াইটেয় বাচ্চাটির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা ছিল অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া। স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অর্থাৎ গলায় কিছু আটকে বিষম লেগে মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। তবে কি গলায় দুধ আটকেই মারা গিয়েছে ২৯ দিনের শিশু? প্রশ্ন উঠছে রাত ১০ টায় মা দুধ খাওয়ানোর পর রাত আড়াইটেয় আবার কে দুধ খাওয়াতে গেল বাচ্চাটিকে? এই বিষয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না কমিশনের।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুকে দুধ খাওয়ানোর পর ঢেঁকুর তোলাতে হয়। তা না করলেই দম আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অনেক সময় দুধ খাইয়ে শিশুকে সঙ্গে সঙ্গে শুইয়ে দিলে ফুসফুস বা শ্বাসনালীতে দুধ ঢুকে শিশুর দম আটকে যায়! আবার এমন ঘটনাও ঘটেছে যে ছোট্ট শিশুকে পাশে নিয়ে শুয়েছেন মা। তাঁর স্তনে ঢাকা পড়ে গিয়েছে শিশুর নাক-মুখ। দম নিতে না পেরে মুখ ভরতি দুধ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে শিশুর। শহরের শিশু চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হামেশাই এ ধরনের ‘কেস’ আসে। মালদার ঘটনাতেও এমনই কিছু হয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। বছর দুয়েক আগে শান্তিপুরের পাঁচপোতা এলাকাতেও সাড়ে তিন মাসের একটি শিশু মারা গিয়েছিল এভাবেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.