শুভঙ্কর বসু: গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে হুগলি জেলার একাংশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে রবিবার থেকেই পরিষেবা স্বাভাবিক হবে বলে কলকাতা হাই কোর্টে জানাল রাজ্য সরকার। কয়েকদিন আগে গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয় ভদ্রেশ্বরের তেলিনিপাড়া এলাকায়। যার জেরে জেলার একাংশে ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা প্রশাসন।
হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও একটি নির্দেশিকা জারি করে জানান, অনভিপ্রেত পরিস্থিতিতে ১২ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে। ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়, শ্রীরামপুর ও চন্দননগর মহকুমা এলাকায় ইন্টারনেট কোম্পানি ও কেবলের নেট পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। সেইমতো ১২ তারিখ থেকেই চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর, সিঙ্গুর, হরিপাল, তারকেশ্বর, শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, ডানকুনি, চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়া-সহ আশপাশের এলাকাগুলিতে বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট পরিষেবা।
কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতিতে যখন ইন্টারনেটের উপরই মানুষের জীবন অনেকাংশে নির্ভরশীল তখন দিনের পর দিন এভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা যায় না। এই দাবি জানিয়ে আইনজীবী সৌমাভ মুখোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতিকে একটি চিঠি লেখেন। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে বিষয়টিকে জনস্বার্থ মামলা হিসাবে গ্রহণ করে হাই কোর্ট। এছাড়া ওই একই দাবিকে কেন্দ্র করে আরও দু’টি মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। শুক্রবার মামলার একপ্রস্থ শুনানিতে মামলাকারীদের তরফে দাবি করা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনজীবন ইন্টারনেট পরিষেবার উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। খাবার অর্ডার থেকে নিত্যসামগ্রী সবই ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল। পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমও ইন্টারনেট। ফলে ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে সমস্ত জরুরি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার মামলাকারীদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোন জবাব না দিতে পারলেও শনিবার ফের ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মামলার জরুরিভিত্তিক শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, হুগলির যে অংশে অশান্তি ও হিংসার কারণে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল সেখানকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক ও প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রবিবার ওইসব এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক করে দেওয়া হবে।
পাশাপাশি তিনি আরও জানান, গুজব থেকে যাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি না হয় সেই জন্যই রাজ্য সরকারের তরফে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। যদিও প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণন ও অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি এখনই নিষ্পত্তি করেননি। আগামী শুক্রবার ফের মামলাটির শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.