ছবি: প্রতীকী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহবধূর আয়কে আর পাঁচজন উপার্জনকারীর মতো করে বিবেচনা করা যাবে না। কারণ, একজন গৃহবধূ গোটা পরিবারের দায়িত্ব সামলান, দেখভাল করেন। তাই তাঁর কাছে আয় সংক্রান্ত খুঁটিনাটি হিসেবনিকেশ জানতে চাওয়া মোটেই কাম্য নয়। প্রতিমা এক গৃহবধূর দায়ের করা মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC)।
২০১৩ সালে এক দুর্ঘটনায় (Accident) গুরুতর আহত হন প্রতিমা সাহু নামে এক মহিলা। মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেম ট্রাইব্যুনালে (MACT) তিনি জানান, তাঁর মাসিক আয় ৪০০০ টাকা। কিন্তু ট্রাইবুনাল জানায় ৩০০০ টাকা মাসিক আয় হলে তবেই তা গ্রহণযোগ্য। বিষয়টি আদালতের দোরগোড়ায় পৌঁছয়। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তা সাফ জানালেন, ”একজন গৃহবধূর আয় কোনওভাবেই আর পাঁচজনের সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে না। তাঁর থেকে আয়ের নথি-তথ্য জানতে চাওয়া অপ্রত্যাশিত। মনে রাখতে হবে, গৃহবধূ শুধুমাত্র বাইরের কাজে আয় করেই থেমে থাকেন না। তিনি গোটা পরিবার সামলান, রান্না করেন, ঘরদোর পরিষ্কার করেন, সকলের যত্ন নেন। এত কাজ সামলে তবে তিনি আয় করেন। তাঁর আয় দৈনিক ও মাসিক আয় কারও সঙ্গে তুলনীয় নয়।”
ঘটনা সূত্র অনুযায়ী, আবেদনকারী প্রতিমা সাহু একটি মোটরভ্যানের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। শরীরের ৫০ শতাংশই জখম হয়ে যায়। তিনি মানসিকভাবেও ব্যাপক ধাক্কা খান। পরবর্তীতে আদালতে তিনি আশঙ্কাপ্রকাশ করেন, শারীরিক ক্ষমতা হারানোয় পরবর্তীকালে চাকরির রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। এসবের ভিত্তিতে ওই মোটর গাড়ি সংস্থাকে তমলুকের আদালত ২ লক্ষ ৯ হাজার ৭৪৬ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই সংস্থা। মামলার শুনানিতে বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার সিঙ্গল বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, কোনও মহিলার আয়কে আর পাঁচজন উপার্জনকারীর সঙ্গে সমতুল্য নয়। কারণ, শুধুমাত্র উপার্জনই করেন না। গোটা সংসার, পরিবারকে সবদিক থেকে আগলে রাখেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.