ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: করোনা আবহে এবার ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের অন্য ছবি। এবছর ২১ জুলাই আর দেখা যাবে না ধর্মতলামুখী তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের স্রোত। কীভাবে পালিত হবে এবছরের একুশে জুলাই, তার রূপরেখা আগেই স্থির করে দিয়েছিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুথে বুথে শহিদ দিবস উদযাপন করা হবে। বাকি অনুষ্ঠানের খুঁটিনাটি নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে এক ঘণ্টা সেই কর্মসূচি হবে। এরপর ঠিক দুপুর ২টোয় কালীঘাটে নিজের দলীয় কার্যালয় থেকে অডিও বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ধর্মতলায় শহিদ তর্পণ হবে প্রতি বছরের মতোই। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে সেখানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শুধু দলের রাজ্য সভাপতি ও মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই (21 July) মেয়ো রোডের পুলিশের গুলিতে মৃত ১৩ শহিদের বেদি তৈরি হবে ধর্মতলায়। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি জানিয়েছেন, সেটাই মূল বেদি। সেখানে শ্রদ্ধা জানাবেন দলের শীর্ষ দুই নেতা। এই দু’জনের বাইরে কেউ শহিদ তর্পণে থাকবেন না। তৃণমূল ভবনে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শ্রমিক নেত্রী দোলা সেনকে।
সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতে ভিড় এড়াতে যেহেতু মূল কর্মসূচি হবে না, সেই কারণে নেত্রীর বার্তা শোনার জন্য পাড়ায় পাড়ায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে। দিনটিকে উৎসর্গ করে ‘সকল বাধা ছিন্ন করে জাগে যৌবন নতুন সুরে’ শীর্ষক একটি গানও লিখেছেন নেত্রী। সুর দিয়ে সেটি তৈরি করে ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শহিদ দিবসে সারাদিনই এই গান বাজানো হবে। ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মাস্ক পরে, স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে তবেই কর্মসূচি পালনে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নেত্রী যে বার্তা দেবেন, তা দলের ফেসবুক পেজ, নেত্রীর পেজ-সহ সমস্ত নেতা, মন্ত্রীর একাধিক সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ বা প্রোফাইল থেকে দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটি হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) গ্রুপ করে নেত্রীর পেজের লিংক ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
অন্যান্যবার শহিদ পরিবারের সদস্যদের কালীঘাটে নেত্রীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নেত্রীর সঙ্গেই ধর্মতলার মঞ্চে আসেন তাঁরা। এবছর সেই সূচিতেও বদল। শহিদ পরিবারের সদস্যদের নিকটবর্তী বুথে নিয়ে এসে সম্মান জানাবে স্থানীয় নেতৃত্ব, এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শাসকদলের অন্দরে করোনা সংক্রমণ খুব কম নয়। বিধায়ক ও প্রাক্তন কাউন্সিলর, যাঁদের শরীরে কোভিড সংক্রমিত হয়েছে, তাঁদের ঘর থেকে বেরতে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দলে রয়েছেন মন্ত্রী সুজিত বসু, সরকারি দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বিধায়ক সমরেশ দাসের মতো কয়েকজন। রয়েছেন কলকাতা-সহ একাধিক পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর। কেউ সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। কারও এখনও সংকট কাটেনি। তাঁদের প্রত্যেককে ঘর থেকে বেরতে নিষেধ করা হয়েছে। মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডে করোনা আক্রান্ত। ফলে হোম আইসোলেশনে মন্ত্রী। তাঁরও এদিন বেরনো নিষেধ। এঁরা সকলেই ঘরে বসে নিজেদের মতো করে শহিদ দিবস পালন করবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.