সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরীর হোটেল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হল হাওড়া পুরসভার ১ নম্বর বরো চেয়ারম্যান রজত সরকারের মৃতদেহ। সূত্রের খবর, বুধবার সকালে হোটেলের নিচের লনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল রজতবাবুর মৃতদেহটি। তবে ঠিক কীভাবে রজতবাবুর মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা।
খবর পেয়ে ইতিমধ্যে রজতের বাড়িতে গিয়েছেন ক্রীড়া দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা। উত্তর হাওড়ার তিন নম্বর ওয়াডের্র কাউন্সিলর বাপি মান্না জানিয়েছেন, “মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মদ্যপান করে আত্মহত্যাও করতে পারেন রজতবাবু। তবে দুর্ঘটনা নাকি অন্য কিছু তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।” আবার একাংশের তরফে এটিকে নিছকই দুর্ঘটনাই বলা হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে নড়েচড়ে বসেছে হাওড়া পুরসভা। মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেছেন, “দুই মেয়র পারিষদ সদস্য গিয়েছেন পুরীতে। সেখানে ঠিক কী ঘটেছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। হাওড়া পুলিশ সুপার ডি পি সিং—কে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি। দ্রুত যাতে রজতবাবুর দেহ হাওড়ায় ফিরিয়ে আনা যায় তার সব ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।” উলটোরথের আগের দিন কয়েকজন কাউন্সিলর ও পাড়ার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে পুরীতে গিয়েছিলেন রজতবাবু। সেখানে জগন্নাথ দর্শন করার পর ছুটি কাটাচ্ছিলেন তাঁরা। শুক্রবার সকালে ফেরার কথা ছিল তাঁদের। সেখানেই আচমকা এই ঘটনায় বিস্মিত রজতবাবুর পরিবার। হঠাৎ কেন এভাবে মৃত্যু হল রজতবাবুর তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। কারণ প্রতি বছরই রজতবাবু ও আরও কয়েকজন কাউন্সিলর যান পুরীতে। এমনকী তাঁদের একটা ভ্রমণের টিমও রয়েছে।
এদিকে তদন্তে নেমে ওড়িশা পুলিশ জানতে পেরেছে, রজতবাবু যে হোটেলে ছিলেন সেখানেই তার বন্ধুরাও ছিলেন। যদিও অন্য কাউন্সিলররা ছিলেন অপর একটি হোটেলে। পুরসভা সূত্রে খবর, উল্টোরথ উপলক্ষে এই সময় হাওড়াতেই রয়েছেন কাউন্সিলর গৌতম চৌধুরি, অনিল বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এই ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। জানা গিয়েছে, রজতবাবু সমুদ্র সৈকতের ধারে একটি বড় হোটেলে উঠেছিলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে কয়েকজন পাড়ার বন্ধু ছিলেন। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ দাঁত মাজতে মাজতে ছাদে গিয়েছিলেন রজতবাবু। সেখান থেকেই পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে এটি নিছকই দুর্ঘটনা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। মঙ্গলবার রাতে মদ্যপানও করেন রজতবাবু। এমনকী সেই মদ্যপানের সময় নাকি সঙ্গে ছিল পাড়ারই কয়েকজন বন্ধু। এদিনের ঘটনার পর প্রত্যেক বন্ধুকে থানায় ডেকে জেরা করে পুলিশ। ঘটনার পর হোটেল ঘুরে পুলিশের কাছে যান বাপি মান্না, অনিল বন্দ্যোপাধ্যায় ও গৌতম চৌধুরিরা। রজতবাবুর ময়নাতদন্ত করানো হচ্ছে। দ্রুত সেই প্রক্রিয়া শেষ করে যাতে রজতবাবুর দেহ কলকাতায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় তার ব্যবস্থা করছেন পুরীতে থাকা তৃণমূলের নেতারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.