গোবিন্দ রায়: অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার বকেয়া বেতন মেটাতে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ খোদ অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। আর তাতেই সরগরম বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস। মামলায় আগামী ১৮ আগস্ট উলুবেরিয়া জেলার অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শক বনমালী জানাকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। শুধু তাইই নয়, আদালতের নির্দেশ সত্বেও তাঁর পাওনা বকেয়া বুঝিয়ে না দিয়ে কেন তাঁর সঙ্গে এই রকম বিরূপ আচরণ করা হল তার কারণ দর্শাতে হবে আদালতে।
চল্লিশ বছর বয়সে মামলা শুরু করেছিলেন, আজ হয়েছেন ৭৬ – এর প্রবীণ নাগরিক। ২৫ বছরের বেতন বকেয়া পড়ে ছিল। তা হাতে পেতেই প্রায় ৩৬ বছর ধরে এই দীর্ঘ আইনি লড়াই। অবশেষে সফলও হয়েছিলেন প্রবীণ শিক্ষিকা শ্যামলী ঘোষ। এযাবৎকালের ওই স্কুল শিক্ষিকার সমস্ত বকেয়া-সহ মাইনের ১০ শতাংশ সুদ তাঁকে মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গত ৫ মে আট সপ্তাহের মধ্যে আদালতের নির্দেশ মতো যাতে শিক্ষিকা সমস্ত বকেয়া ফেরত পান তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে ছিলেন বিচারপতি।
কিন্তু শুক্রবার হঠাৎই ভরা এজলাসে কান্নায় ভেঙে পড়েন শ্যামলীদেবী। অভিযোগ, নির্দেশ মোতাবেক সমস্ত কাগজপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তা সত্বেও তাকে বারংবার ডেকে পাঠানো হচ্ছে। আরও অভিযোগ, উলবেরিয়ার অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শক বনমালী জানা তাঁর ২৫ বছরের বকেয়া মিটিয়ে দিতে পারেন। তবে তার জন্য শিউলি দেবীকে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে, এমনটাই বলেছেন। এমনকী শিউলি দেবীকে হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ করে তাঁর সঙ্গে দেখা করার কথাও বলেন।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই ওই স্কুল পরিদর্শকের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মামলাকারিকে আশ্বস্ত করে বিচারপতি জানান, “কারও সঙ্গে আপনাকে দেখা করতে হবে না। আদালত আপনার পাশে আছে।” একই সঙ্গে অবিলম্বে শ্যামলী দেবীকে তার বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.