ফাইল ছবি
গোবিন্দ রায়: স্বামী-স্ত্রী উভয়ে কর্মরত হলেও দুজনের একজন যদি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত থাকেন, তাহলে অপরজনের ‘হাউস রেন্ট আলাউন্স’ বা বাড়ি ভাড়া ভাতা বন্ধ করতে পারে না রাজ্য সরকার। স্বামী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত, এই অজুহাতে এক শিক্ষিকার ‘হাউস রেন্ট অ্যালন্স’ বন্ধ সংক্রান্ত মামলায় স্পষ্ট জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এই ধরনের পদক্ষেপ আইন বিরুদ্ধ বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। আদালতের পর্যবেক্ষণে তাঁর মত, স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে কেউ প্রাইভেটে চাকরি করলে তা ধর্তব্যের মধ্যে ধরা যায় না।
অভিযোগ, ৮ বছর আগে রাজ্য সরকার এক শিক্ষিকার বেতনের অংশ হিসেবে গণ্য হওয়া ‘হাউস রেন্ট অ্যালায়েন্স’ বন্ধ করে দেয়। শিক্ষিকা রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বিভাগে আবেদন জানালেও তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর আইনজীবী সুদীপ ঘোষ চৌধুরী জানান, “হুগলির কিংকরবাটি এগ্রিকালচারাল স্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা সুপর্ণা দাস সরকার। ২০০৬ সাল থেকে তিনি কর্মরত। সেই সময় থেকেই তিনি বাড়ি ভাড়া পেয়ে আসছেন। হঠাৎ-ই ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে তাঁর বাড়ি ভাড়া বন্ধ করে দেয় রাজ্য। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। যদিও রাজ্যের যুক্তি, দুজনে একসঙ্গে চাকরিরত অবস্থায় বাড়িভাড়া পেতে পারে না।
সরকারি কৌঁসুলি তনুজা বসাকের দাবি, “এনিয়ে রাজ্যের স্পষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। ২০১২ সালে রাজ্যের জারি হয় এক নির্দেশিকা তুলে ধরে রাজ্যের কৌঁসুলির আরও দাবি, স্বামী স্ত্রী দুজনের এক জন যদি বেসরকারি চাকুরিরতও হন তাহলে অপরজন রাজ্যের বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত এই ভাতা পাবেন না। পালটা মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি ছিল, এনিয়ে আগেই হাই কোর্টের বিচারপতি শেখর ববি সরাফের নির্দেশিকা রয়েছে। তার পরেও রাজ্য তা মানেনি। বহু সরকারি চাকরিরতের বাড়িভাড়া এভাবে বন্ধ করে রেখেছে রাজ্য। রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত বিধিবহির্ভূত। বর্তমানে রাজ্যের জারি করা ওই নির্দেশিকার কোনও অস্তিত্বই নেই। আবেদনকারির বক্তব্য প্রেক্ষিতে রাজ্যের যুক্তি খারিজ করে ওই শিক্ষিকাকে এক মাসের মধ্যে তাঁর সুদ সহ বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বসু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.