নব্যেন্দু হাজরা: কাশি, সঙ্গে হালকা জ্বর। আর তাতেই পরিবারের লোকজন ভেবেছিলেন, করোনায় (Coronavirus) আক্রান্ত বৃদ্ধ। আর তা ভেবেই সোজা বরাহনগরের বাড়ি থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধকে রাস্তায় বের করে দেন তাঁর পরিজনরা। তারপর কেটে গিয়েছে দু’দিন। জোটেনি খাওয়াদাওয়া। অসুস্থ শরীরে বৃদ্ধ পড়েছিলেন রাস্তার ধারেই। হয়ত এভাবেই কেটে যেত সময়। কিন্তু এখনও শহরটা যে প্রাণের, সহমর্মিতার। তাই বৃদ্ধকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে এগিয়ে আসেন এক সহৃদয় ব্যক্তি। তিনিই ব্যবস্থা করে তাঁকে ভরতি করান হাসপাতালে। অনিশ্চিত জীবন থেকে অন্তত কিছুটা নিরাপত্তা মিলল।
রবিবার শোভাবাজারের কাছে তাকে পড়ে থাকতে দেখেন এক ব্যক্তি। তিনি এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হেল্প লাইন নম্বরে ফোন করেন। ফোন পেয়েই সংস্থার সদস্যরা এসে অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে ওই বৃদ্ধকে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যান। ভরতি করা হয় তাঁকে। বৃদ্ধের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, রিপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষায়।
এদিন শোভাবাজারের কাছে ফুটপাথে ওই বৃদ্ধকে রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন আরও অনেকেই। কিন্তু তাঁর শরীরে করোনার উপসর্গ থাকায় কেউই আর এগিয়ে যেতে চাননি। অনেকেই দূর থেকে ছবি তোলেন, নানা উপদেশও দেন। এভাবেই কেটে যায় দীর্ঘ সময়। বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থারও ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। তখন ভিড়ে থাকা এক ব্যক্তি এগিয়ে আসেন। কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের হেল্প লাইন নম্বরে ফোন করেন। সেখান থেকে কর্মীরা এসে ওই ব্যক্তির পরিস্থিতি বুঝে বেসরকারি সংস্থার অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন। নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি আগে ডেকরেটরের কাজ করতেন। দিন পাঁচেক আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপরই তাঁর পরিবারের সদস্য চিকিৎসা না করিয়ে সোজা বাড়ি থেকে বের করে দেন। কোভিড কেয়ারের সঙ্গে যুক্ত কর্মী রূপশ্রী রায় বলেন, ”করোনা পরীক্ষার আগেই ওঁকে পরিবারের লোকজন কীভাবে বের করে দিতে পারলেন? করোনা হতেই পারে, রোগীর চিকিৎসা হলেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমাদের আরও মানবিক হতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.