সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অ্যাকাউন্ট্যান্টের চাকরি চাই? তবে সেই পুরুষ প্রার্থীকে হতে হবে বি কম গ্র্যাজুয়েট। এই ক্ষেত্রে থাকতে হবে ৪-৫ বছরের অভিজ্ঞতা, ট্যালি সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান। বয়স হতে হবে ৩৫ বছরের মধ্যে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল প্রার্থী যেন অবশ্যই হন অবাঙালি।
না, এমন বিজ্ঞাপন অন্য কোনও রাজ্যের নয়। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারীর একটি বেসরকারি সংস্থার জন্য এই বিজ্ঞাপন দিয়েছে একটি কন্সালটেন্সি এজেন্সি। এজেন্সির অফিস যাদবপুরের রবীন্দ্রনগর কালীবাড়ি এলাকায়। মজার বিষয় হল কন্সালটেন্সির মালিক নিজেও একজন বাঙালি। তিনি জানান, নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে নাম রেজিস্টার করালে, সেই প্রার্থীকে চাকরির খোঁজ দেওয়ার কাজ করে তাঁর এজেন্সি। কোনও কোম্পানি কর্মী নিয়োগ করতে চাইলে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া প্রার্থীকে। তাঁর বক্তব্য, বর্তমানে এ শহরের অনেক কোম্পানিই বাঙালি যুবক নিয়োগ করতে চাইছে না। অনেকের ধারণা, বাঙালিদের ইংরেজি ভাষার উপর পর্যাপ্ত দখল নেই। তাঁরা কাজে ফাঁকি দেয়। সেই কারণেই কর্মক্ষেত্রে অবাঙালিদের চাহিদা বাড়ছে।
তবে শুধু এই এজেন্সিই নয়, শহরের একাধিক এজেন্সির বিজ্ঞাপনে পরিষ্কার ভাষায় ‘অবাঙালি’ প্রার্থীর উল্লেখ রয়েছে বলে খবর। বাঙালি কর্মপ্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই বলছেন, আবেদন করার পর তাঁদের ইন্টারভিউর জন্য ডাকে না সংস্থা। শুধুমাত্র নাম ও পদবি দেখেই সরিয়ে রাখা হয় তাঁদের বায়োডেটা। ফলে এ রাজ্যে ব্যবসা করতে আসা কোম্পানিগুলির মধ্যে যে বাঙালি বিদ্বেষ ক্রমেই বেড়ে চলেছে, সে ছবিই যেন দিনে দিনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। যা বাংলার জন্য মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়।
ইতিমধ্যেই এর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বাঙালিদের একটি সংগঠন। সেই সব কোম্পানির দপ্তরের সামনে গিয়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে বলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। কিন্তু এমন প্রবৃত্তি বাড়তে থাকলে যে নিজভূমেই কোণঠাসা হয়ে পড়বে বাঙালি, সে আশঙ্কা আর উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.