অর্ণব আইচ: এবার করোনায় আক্রান্ত হলেন কলকাতা পুলিশের আইপিএস পদমর্যাদার এক পুলিশকর্তা। বৃহস্পতিবার যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর) শুভংকর সিংহ সরকারের কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে। বাড়িতেই তিনি আইসোলেশনে আছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে। যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর) পদের দায়িত্বে রয়েছেন গৌরব শর্মা। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, এই প্রথম কলকাতা পুলিশের কোনও আইপিএস পদমর্যাদার অফিসার করোনায় আক্রান্ত হলেন। এর আগে রাজ্য পুলিশের দুই আইপিএস করোনায় আক্রান্ত হন। লালবাজারের প্রধান বিল্ডিংয়েই যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর)-এর অফিস। এই একই তলায় বসেন আরও কয়েকজন আইপিএস পদমর্যাদার পুলিশকর্তা। এই বাড়িটি স্যানিটাইজ করা হচ্ছে।
পুলিশের পক্ষে যাঁরা করোনার বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করছেন, তাঁদের অগ্রভাগে রয়েছেন শুভংকর সিংহ সরকার। তিন দিন আগেই অসুস্থতা অনুভব করেন তিনি। তাঁর জ্বর আসে। তাঁর লালারস পরীক্ষা করার পর রিপোর্ট আছে কোভিড পজিটিভ। তাঁর সংস্পর্শে যে পুলিশকর্মী ও অফিসাররা এসেছেন, তাঁদেরও করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে লালবাজার। ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা ১ হাজার ৭০০ পেরিয়েছে। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ১ হাজার ৩৭০ জন। এদিন মোট ২৩ জন পুলিশকর্মী ও অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আবার এদিনই করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪১ জন পুলিশকর্মী। এর আগে লালবাজারের এক পুলিশকর্তার আপ্তসহায়ক ও অন্য পুলিশকর্তার গার্ড করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ ছাড়াও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ও ট্রাফিক বিভাগের বহু কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য লালবাজারে বসানো হয়েছে স্যানিটাইজেশন টানেল। পুলিশের পক্ষ থেকেও তৈরি করা হচ্ছে স্যানিটাইজার।
ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের থানা ও ট্রাফিক গার্ডের ব্যারাকে পুলিশকর্মীদের থাকতে বারণ করা হয়েছে। যাঁদের বাড়ি অনেক দূরে ও বরাবর ব্যারাকে থাকেন, তাঁরা শুধু কয়েকটি থানার ব্যারাকে রয়েছেন। বাকিদের ব্যারাকের বদলে কমিউনিটি হল, বিয়েবাড়ি, এমনকী হোটেলেও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি থানা ও ট্রাফিক গার্ডে করোনার সঙ্গে লড়াই করতে নির্দিষ্ট কার্যবিধি বা এসওপি পাঠিয়েছে লালবাজার। দর্শনার্থী বা অভিযোগকারীদের জন্য প্রত্যেকটি থানায় তৈরি হচ্ছে ভিজিটরস রুম। প্রত্যেক দর্শনার্থীর তাপমাত্রা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক ও প্রত্যেকে হাত স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে তবেই থানায় ঢুকতে পারবেন। দর্শনার্থীদের গাড়ি যেন পুলিশের গাড়ির কাছাকাছি পার্ক না করা হয়, সেই বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। নাকা চেকিংয়ের সময় প্রত্যেক পুলিশকর্মীর মাস্ক ও গ্লাভস পরে থাকা আবশ্যক। নাকার গার্ডরেলের ৬০ ফুট দূরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চালকদের সঙ্গে কথা বলতে হচ্ছে। গ্লাভস পড়ে গাড়ির নথি দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.