অভিরূপ দাস: COVID হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অন্যান্য চিকিৎসাও শুরু হোক, এই দাবিতে দিন দুই ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ চলছে হাসপাতালে। ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবা। শুক্রবার সমস্যার সমাধানে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ঘেরাও হয়ে গেলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের দুই অধিকর্তা। কলেজ অধ্যক্ষের ঘরে তাঁরা আটকে পড়লেন। ভেস্তে গিয়েছে আলোচনাও। এই নিয়ে তুমুল উত্তেজনাকর পরিবেশ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে (Calcutta Medical College Hospital)।
কলকাতা মেডিক্যালকে COVID হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সেইমতো এখানে শুধুমাত্র করোনা আক্রান্ত রোগীদেরই চিকিৎসা হয়। তবে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা চালু করার দাবি তুলেছেন এখানকার জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের বক্তব্য, এখানে অন্যান্য রোগীরাও আগে ভাল চিকিৎসা পেতেন। থ্যালাসেমিয়া, ক্যানসারের মতো রোগীরা অতি কম খরচে চিকিৎসা করাতে পারেন। এভাবে এতদিন ধরে সেই চিকিৎসা বন্ধ করে রাখলে নিম্নবিত্ত রোগীরা কোথায় চিকিৎসা পাবেন? এই প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেইসঙ্গে নিজেদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস (Clinical Classes) ব্যাহত হচ্ছে বলেও তাঁরা অভিযোগ জানান।
১ তারিখ থেকে এই দাবিপূরণের জন্য কার্যত আন্দোলন শুরু হয়েছে। এমারজেন্সির সামনে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। দু’দিন হয়ে গেলেও, এই আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসেননি তাঁরা। জোরদার হয়েছে দাবি। অন্যদিকে, জুনিয়র ডাক্তারদের এই দাবি মানতে নারাজ স্বাস্থ্যভবন। যেহেতু কলকাতা মেডিক্যাল ঘোষিত COVID হাসপাতাল, তাই আপাতত অন্য কোনও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যাবে না সেখানে। একথা স্পষ্ট করে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
এরপরও টানা প্রায় আড়াই দিন ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভে করোনার চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। তাতে সতর্ক হয়ে শুক্রবার তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে সেখানে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য এবং স্বাস্থ্য ভবনের স্পেশ্যাল সেক্রেটারি তমালকান্তি ঘোষ। ছিলেন অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায়ও। তাঁরা প্রস্তাব দেন, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ৫ জনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা করার। দেবাশিস ভট্টাচার্য তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, COVID হাসপাতালে অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা শুরু হলে, সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক। বিপদ বাড়বে কয়েকগুণ। অভিযোগ, তাঁদের কথা বুঝে চাননি বিক্ষোভকারীরা। ফলে আলোচনা ভেস্তে যায়। দুই স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে ঘিরে বিক্ষোভের পারদ আরও চড়তে থাকে। এই বিক্ষোভ থেকে তাঁদের উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। দেড় ঘণ্টা ধরে কলেজের প্রিন্সিপাল মঞ্জুশ্রী রায়-সহ তিনজন আটকে রয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.