বন্ধুরা ডাকলেও খেলতে যেতে দেননি যুবকের মা।
অর্ণব আইচ: ক্রিকেট খেলতে বড়ই ভালবাসতেন। পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে মাঝে মাঝেই খেলতেও যেতেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। শনিবার দুপুরেও বন্ধুরা খেলার জন্য ডাকতে এসেছিল। কিন্তু খেলতে যেতে দেননি মা। বলেছিলেন, ‘খেলা নয়, পড়ায় মন দাও’। সেই অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন কসবা (Kasba) এলাকার তরুণ।
নাম সোহম বসু (২১)। বেসরকারি কলেজে ইলেকট্রনিকস কমার্শিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। মাঝেমধ্যেই পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন। শনিবার দুপুর বারোটা নাগাদ সোহমকে খেলতে যাওয়ার জন্য ডাকতে এসেছিলেন দুই বন্ধু। কিন্তু সোহমের মা তাদের বকাবাকি করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। খেলতে যাওয়ার জন্য ছেলেকেও বকাবকি করেছিলেন। তার পর বিশেষ কাজে সোহমের বাবা-মা দু’ জনই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
বাড়ি ফিরে দেখেন সিলিং থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে ছেলে। সঙ্গে সঙ্গে সোহমকে উদ্ধার করে ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, গলায় ফাঁস লেগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এর পর পুলিশে খবর যায়। তারা তদন্তে শুরু করতেই উঠে আসে হৃদয় বিদারক ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, মায়ের বকাবকির জেরেই অভিমানে আত্মহত্যা করেন সোহম। পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপও ছিল তাঁর উপর।
মনোবিদরা বলছেন, আজকের প্রজন্মের উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। বাবা-মায়ের বাড়তে থাকা প্রত্যাশার চাপের সঙ্গে অনেক সময়েই পাল্লা দিতে পারেন না তাঁরা। নিজেদের প্যাশন, বন্ধুবান্ধব, আড্ডা বাদ দিয়ে বইমুখো হতে হচ্ছে তাদের। ফলে মনের উপর চাপ বাড়ছে। আর তাই অনেকসময় বাবা-মায়ের শাসনকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না তারা। ফলে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে। সেই চাপেরই বলি হল আরও এক তরতাজা যুবক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.