ফাইল ছবি
শুভঙ্কর বসু: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের মাধ্যমে পুর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ রাজ্যে নতুন নয়। আসন্ন কলকাতা ও হাওড়া পুর নির্বাচনেও তা-ই হবে কি না, তা নিয়ে কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছিল। শুক্রবার তাতে দাঁড়ি পড়ে গিয়েছে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর। সূত্রটির দাবি, এবারও পুর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমেই। এবং সেক্ষেত্রে একটা নতুনত্বও থাকতে পারে। তা হল, এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের কোনও পুর নির্বাচনে ইভিএমের সঙ্গে ব্যবহার হতে পারে ভোটারস ভেরিফায়েবেল পেপার অডিট ট্রেল বা VVPAT।
আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা ও হাওড়ায় পুরভোট হবে। এ ব্যাপারে আগেই রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরকে চিঠি দিয়ে সম্মতির কথা জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রস্তুতির জন্য শুক্রবার হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ও কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, সেখানেই ইভিএমে ভোট করানোর বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, কমিশন চাইছে, কলকাতা ও হাওড়ার পুর ভোট হোক নতুন প্রযুক্তির এম-থ্রি টাইপ মেশিনে। তেমনটা হলে সেটাই হবে রাজ্যের কোনও পুর নির্বাচনে ভিভিপ্যাটের প্রথম ব্যবহার।
একজন ভোটার ঠিক কোন প্রার্থীকে ভোট দিলেন, ভিভিপ্যাট তা নিশ্চিত করে। এতে ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও কোনও প্রশ্ন থাকে না। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের সমস্ত বুথে ভিভিপ্যাটের ব্যবহার করেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ফলে ভোটাররাও ভিভিপ্যাট সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তাছাড়া পুর ভোটে যেসব সরকারি কর্মী কাজ করবেন, তারাও এই নতুন প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সে কারণে রাজ্য নির্বাচন কমিশনও ইভিএমের সঙ্গে এবার ভিভিপ্যাট কাজে লাগাতে চাইছে।
সাধারণত পুরভোট যেহেতু ইভিএমেই হয়, তাই ইতিমধ্যে কমিশনের ভাঁড়ারে প্রায় ২০ হাজার ইভিএম মজুত। তবে সেগুলি এম-টু পর্যায়ের। কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার ভোট নতুন প্রযুক্তির এম-থ্রি টাইপ ইভিএমে করতে গেলে নির্মাতা সংস্থা ইলেক্ট্রনিক পাওয়ার কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিআইএল)-কে বরাত দিতে হবে। সূত্রের খবর, এর আগে একবার ইসিআইএল হায়দরাবাদের ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট থেকে প্রতিনিধিরা এসে কমিশনের কর্তাদের ইভিএম (এম-থ্রি) ও ভিভিপ্যাটের কার্যকারিতা হাতেকলমে দেখিয়ে গিয়েছেন। পুর ভোটের জন্য তারা তা সরবরাহ করতেও প্রস্তুত।
কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে মোট বুথের সংখ্যা ৪৭০০। হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডে মোট ১২১৩টি বুথ। সূত্রের খবর, আগামী ১৭ নভেম্বর ওয়ার্ডভিত্তিক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে। তারপরই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বা বিজ্ঞপ্তি জারি করবে কমিশন। তার আগে অবশ্য রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারে কমিশন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা জানিয়েছেন, পুর ভোট আয়োজনের জন্য তাঁরা আগেই প্রস্তুত ছিলেন। করোনার জন্য কিছুটা বাড়তি সময় পাওয়া গিয়েছে। বহু আগেই সীমানা পুর্নবিন্যাস হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি পুরসভার ওয়ার্ডভিত্তিক আসন সংরক্ষণ সংক্রান্ত চূড়ান্ত তালিকাও তৈরি হয়ে রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.