অর্ণব আইচ: পুলিশ মহলে তার পরিচয় ‘স্পাইডারম্যান’ নামে। দেওয়াল যতই মসৃণ হোক, তাতে রেন ওয়াটার পাইপ আর অল্প কার্নিশ থাকলেই হল। ‘দেওয়াল বেয়ে’ তরতর করে চারতলা বা পাঁচতলায় উঠে যায় রবিউল গাজি। নেহাৎ ‘স্পাইডারম্যান’-এর মতো জাল ছুঁড়তে পারে না বলে। যদিও তারও প্রয়োজন নেই। রেনপাইপ বা কার্নিশ, জানলা বেয়ে সহজেই নেমে পড়ে সে। এভাবেই ঘরের ভিতর ঢুকে হস্তগত করে মোবাইল, ল্যাপটপ, টাকা। কলকাতার (Kolkata) বিভিন্ন জায়গায় চুরি করে বেড়াচ্ছিল ‘স্পাইডারম্যান’ রবিউল। কিন্তু শেক্সপিয়ার সরণির একটি বাড়িতে চুরি করেই ধরা পড়ে গেল সে।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিউল গাজি নামে ওই ‘স্পাইডারম্যান’ ট্যাংরার (Tangra) বাসিন্দা। কিছুদিন আগেই শেক্সপিয়র সরণির এক বাসিন্দা অভিযোগ জানান, নিজের চারতলার ফ্ল্যাটটি যথেষ্ট সুরক্ষিত মনে করেই তিনি বারান্দার দরজা খোলা রেখেছিলেন। কিন্তু এর মধ্যেই দুষ্কৃতী ভিতরে ঢুকে সাতটি মূল্যবান মোবাইল ও সাড়ে ন’হাজার টাকা চুরি (Theft) করে। ওই মোবাইলগুলি ছিল ঘরের বিভিন্ন জায়গায়। টাকা ছিল আলমারির লকারে। বাড়ির বাসিন্দারা বুঝতেও পারেননি কখন চুরি হয়েছে এই জিনিসগুলি।
অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। বাড়ি ও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ (CCTV Footage) খতিয়ে দেখেন গোয়েন্দারা। তাতেই ধরা পড়ে রবিউল ও তার এক সঙ্গীর ছবি। সেই সূত্র ধরে ‘স্পাইডারম্যান’ রবিউলকে শনাক্ত করেন গোয়েন্দারা। ট্যাংরায় হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সঙ্গীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ওই চুরি যাওয়া টাকা। রবিউলকে টানা জেরা করে তিনটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
জেরার মুখে ধৃত যুবক জানিয়েছে, চুরি করা মোবাইল বা ল্যাপটপ (Laptop) ‘রিসিভার’দের এজেন্টদের দেয় সে। অনেক কম দামে মোবাইলগুলি বিক্রি করে সেই এজেন্টদের কাছে। পুলিশের কাছে তার দাবি, যত উঁচু বাড়ি হোক না কেন, তার সমস্যা হয় না। পাইপ, কার্নিশ, জানলা, এমনকী সুযোগ পেলে দেওয়াল বেয়েও উঠে যায় সে। ফলে যতই উঁচুতে ফ্ল্যাট হোক, তার পক্ষে অসুবিধা হয় না। প্রাণের মায়া না করে বারান্দা দিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে চুরি করে সে। তাকে জেরা করে কলকাতার আরও কয়েকটি চুরির ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.