অর্ণব আইচ: ব্যাঙ্ক থেকে হঠাৎই মেসেজ পেয়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন মধ্য কলকাতার তালতলার বাসিন্দা। তাঁর এটিএম কার্ড ‘ব্লক’ হয়ে গিয়েছে। অবাক হওয়ার তখনও বাকি ছিল। ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারলেন, একটি অনলাইন বিপণির মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ৪৩ হাজার ৬২৬ টাকা।
এটিএমে স্কিমার বসিয়ে ক্লোনিংয়ের পর এবার অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং। অভিনব পদ্ধতিতে শহরের এক বাসিন্দার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ করে তুলে নেওয়া হল টাকা। এই বিষয়ে তালতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু করে পুলিশ খতিয়ে দেখছে কীভাবে হ্যাক করা হল ওই অ্যাকাউন্ট। এর আগেও এটিএম কার্ড ঘিরে শহরে বার বার জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। কখনও ফোন করে এটিএম কার্ডের নম্বর চেয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছে জালিয়াতরা। আবার কার্ড হাতছাড়া না করা সত্ত্বেও এটিএমে ‘স্কিমার’ বসিয়ে জালিয়াতরা টাকা তুলে নিয়েছে। কিন্তু এভাবে অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ করে টাকা তুলে নেওয়ার পদ্ধতিটি কিছুটা অভিনব বলেই ধারণা পুলিশের।
পুলিশ জানিয়েছে, তালতলার ডক্টর লেনের এক বাসিন্দার কাছেই ছিল তাঁর বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম কার্ড। গত ৭ নভেম্বর তাঁর মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। তাতে বলা হয়, তাঁর এটিএম কার্ডটি ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে। এই মেসেজটি পেয়ে তিনি কিছুটা অবাকই হন। তিনি ওই বেসরকারি ব্যাংকের এন্টালি শাখায় যান। সন্দেহের বশে ব্যাংকের পাস-বই আপডেট করার পরই তাঁর চক্ষু চড়কগাছে। গত ৩ নভেম্বর তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে পরপর ৬টি লেনদেন হয়েছে। তাতেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে মোট ৪৩ হাজার ৬২৬ টাকা। জানা গিয়েছে, সরাসরি নয়, প্রতারণা করা হয়েছে একটি অনলাইন বিপণিতে কেনাকাটা করেই । তার মধ্যে যেমন একটি লেনদেনে ২১ হাজার ৯৯০ টাকার জিনিস কেনা হয়েছে, তেমনই ১৬৯ টাকার জিনিসও কিনেছে জালিয়াতরা।
পুলিশের কাছে ওই ব্যক্তি জানান, তিনি কাউকে তাঁর এটিএম কার্ডের নম্বর অথবা ওটিপি দেননি। তদন্ত শুরু করার পর পুলিশের ধারণা, ওই বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত, এমন কেউ ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারে। ‘হ্যাকার’ কোনও উপায়ে তাঁর গোপন কোড বা পাসওয়ার্ড যে জানতে সক্ষম হয়েছে, সেই বিষয়ে পুলিশ অনেকটাই নিশ্চিত। কে বা কারা গত ৩ নভেম্বর পর পর জিনিসের অর্ডার দিয়ে ওই বিশেষ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.