ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: শুক্রবারের ব্রিগেডে কোন কোন নেতা বিজেপি বিরোধী উপস্থিত হন তা নিয়ে বাম মহলে আগ্রহ ছিলই। চাপও বাড়ছিল সিপিএমের মধ্যে। তবে শুক্রবার ব্রিগেড শুরুর কয়েকঘণ্টা আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা রাহুল গান্ধীর শুভেচ্ছাপত্র যেন ‘পত্রবোমা’ হয়ে ধরা দিল বঙ্গ সিপিএমের কাছে। এতদিনের জোট জল্পনা যেন এক লহমায় চূর্ণ হল। এমনই অবস্থা আলিমুদ্দিনে।
শুধু আলিমুদ্দিনই বা কেন? কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর এক চিঠিতে গোটা বাম শিবিরই শুক্রবার বিকেল থেকে অনেকটাই যেন ছন্নছাড়া। বস্তুত, চিঠির খবর প্রকাশ্যে আসতেই সিপিএম-সহ গোটা বাম শিবির এই চিঠির ভিন্ন অর্থ খুঁজতে শুরু করেছে। তবে ঘটনা হল, রাহুল গান্ধীর শুভেচ্ছাপত্র যে রীতিমতো রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে এবং লোকসভা ভোটে তা বামেদের বিপক্ষে যেতে বসেছে, তা ঘুরিয়ে মেনে নিয়েছেন শরিক দলের প্রায় সব নেতা। বস্তুত অবস্থা সামাল দিতে গোটা বাম শিবির একযোগে বলতে শুরু করেছে, লোকসভা ভোটে তারা শুধু কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের কথা বলেনি। বিজেপি-তৃণমূল বিরোধী ভোট যাতে ভাগ না হয়, তার জন্য সব দলকে একছাতার তলায় আনতে উদ্যোগী হওয়ার কথাই বলেছেন। বিমান বসু এদিন আগের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে বলছেন, শুধু তো বিজেপির কথা বলা হয়নি। আমরা রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী ভোটকে এক জায়গায় আনার কথা বারবার বলেছি। প্রায় একইরকম মন্তব্য করেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও। তবে অনেকটাই সাবধানী, সতর্ক। সূর্যকান্ত মিশ্র এদিন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর মন্তব্যে সহমত প্রকাশ করে রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথায়, “গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতেই প্রকৃত জাতীয়তাবাদ ও উন্নয়ন সম্ভব। তিনি ঠিকই বলেছেন।”
এরই পাশাপাশি তিনি সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি সূর্যকান্তের গলায়। বলেন, “আমরা নিশ্চয়ই লক্ষ্য রাখব, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কী অবস্থান নেন ভবিষ্যতে তা নিয়ে আমরাও আমাদের অভিমত দেব।” অর্থাৎ আলিমুদ্দিনের নেতাদের রক্তচাপ যে অনেকটাই বেড়েছে, তা এদিন আরও একবার প্রকাশ্যে এসেছে। ব্রিগেড শুরুর আগে রাহুল গান্ধীর শুভেচ্ছাপত্রের ব্যাপক রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিপিআই, আরএসপির মতো দলগুলি। একধাপ এগিয়ে সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব এখন ভোট জোগাড় করতে বেরিয়েছে। তাই এমন মন্তব্য। আবার ভোটের ফল যেমন হবে সেই মতো বলবে।” তবে আমরাও বিজেপি বিরোধী জোটের কথা বলছি। আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামীও এদিন চিঠির রাজনৈতিক গুরুত্ব স্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়,“দীর্ঘদিন পর একমঞ্চে বিজেপি বিরোধী প্রায় সব রাজনৈতিক নেতা হাজির হবেন। অবশ্যই রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। এদিকে এদিনই লোকসভা ভোট নিয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও বিমান বসুর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসে আরএসপি নেতৃত্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.