নব্যেন্দু হাজরা: বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা, মাঝেমধ্যে বাজার করা, টিভি দেখা, গল্পের বই পড়া, দুপুরে নিয়ম করে ঘুম। সন্ধেবেলা ফের টিভি অথবা ফোনের স্ক্রিনে চোখ। আর রাতে তাড়াতাড়ি বিছানায় চলে যাওয়া। লকডাউনের বাজারে এখন আম আদমির আয়েশের জীবন। শুধুই বিশ্রাম, বিশ্রাম আর বিশ্রাম। আর টানা এই বিশ্রামে অফিসবাবুর কেজো শরীর অকেজো হতে বসেছে। ফলে অফিস খুলতেই কাজের টেবিলে গতি তোলা যে বেশ দুষ্কর বিলক্ষণ তাঁরা তা বুঝছেন। ২০ তারিখের পর সরকারি–বেসরকারি অনেক ক্ষেত্রেই কিছু কর্মীকে অফিসে আসতে হবে। ধীরে ধীরে আরও। দীর্ঘ বিরতির পর শুরু হবে কাজ। আর তাতেই গৃহবন্দির টানা প্রায় এক মাসে বদলে যাওয়া অভ্যাস ফেরাতে বেশ বেগ পেতে হবে মধ্যবিত্তকে। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
২৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের কারণে একেবারে কাজকম্মের অভ্যাসে বিরতি টানতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রত্যেকে। শরীর নাড়াচাড়া বিশেষ হচ্ছিল না। শুধু খাওয়া, ঘুম, টিভি দেখা আর গল্পের বইতে আটকে ছিলেন আফিসবাবুরা। আর তাতেই যেন কিছুটা কুঁড়েমিতে ধরেছে কেজো মানুষজনকে। অফিসের কাজকর্ম অনেকেই ভুলতে বসেছেন। ফলে এতদিনের বিরতি কাটিয়ে কাজে ফিরতে যে আলসেমি লাগবে সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই কেজো শরীরকে চাঙ্গা করতে আরও কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের কথায়, বেশিরভাগ লোকই এই লকডাউনের সময় দুপুরে ঘুমিয়েছেন। এবার আচমকাই তাঁরা অফিস করতে শুরু করলেও ঘুম পাবেই। বেশ কিছুক্ষণ কাজের পর তাঁর শরীরে ক্লান্তি ভাব আসবে। কাজ করতে ভাল লাগবে না। তবে তা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। স্বাভাবিক জীবনেই ফিরে আসবেন। অনেকেই মজা করে বলছেন, লকডাউন অফিসের উচ্চপদস্থ কর্তাদেরও বাড়ির অনেক কাজ শিখিয়েছে। তবে ভুলিয়েছে অফিসের কাজ। তাই ফের অফিসের কাজে ফিরতে একটু কষ্ট তো হবেই।
তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুধু যে আলসেমি গ্রাস করেছে অফিসবাবুদের, তা–ই নয়। কাজ করার অভ্যাসটাই চলে গিয়েছে। ফলে শুরুতেই কাজে গতি আসবে না। ভাল লাগবে না কাজ করতে। সেক্ষেত্রে মাঝমধ্যে নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে অফিসেই একটু ঘুরে বেড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। চিকিৎসকদের পরামর্শ, যিনি অফিস যান, অবশ্যই গ্লাভস ব্যবহার করুন। পুরনো ফাইল ধরার আগে গ্লাভস পরে তা বের করা উচিত। না হলে সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকেই যায়। মুখে মাস্ক তো অবশ্যই পরতে হবে। বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “এতদিন সবাই খুব রুটিনমাফিক জীবন কাটিয়েছেন। পরিশ্রমের কাজ, অফিসের কাজ করতে হয়নি। দুপুরে ঘুমিয়েছেন। এবার সেই অভ্যাস বদলে অফিস যেতে গেলে একটু তো প্রথম প্রথম সমস্যা হবেই। তবে ধীরে ধীরে তা কেটে যাবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.