অর্ণব আইচ: আহিরিটোলা ঘাটে ট্রলিবন্দি মহিলার দেহ ভাসাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে দুই মহিলা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মধ্যমগ্রামের বীরেশ পল্লির বাড়িতে পিসি শাশুড়িকে ইট দিয়ে থেঁতলে খুনের পর দেহ লোপাটের চেষ্টা করেছিল মা-মেয়ে। সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় ধরা পড়েছে তারা। কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীদের জেরায় বারবার বয়ান বদল করছে ধৃত ফাল্গুনী ঘোষ। তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে এই কাজ বলে মনে করা হচ্ছে। খুন কবে হয়েছিল? নেপথ্যের ঘটনা কী? কেনই বা দেহ টুকরো করা হল? এসব প্রশ্নের জবাবে একেক সময় একেকরকম কথা বলছে ফাল্গুনী। তবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। জানা যাচ্ছে, পিসি শাশুড়ির সঙ্গে সম্পত্তি আর গয়না নিয়ে বিবাদের জেরেই সম্ভবত খুন হতে হয়েছে বছর পঞ্চান্নর সুমিতা ঘোষকে।
মঙ্গলবার সকালের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ প্রাথমিকভাবে ২ মহিলাকে আটক করে জেরা শুরু করলেও আপাতত মধ্যমগ্রাম থানা এই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে। খুনের ঘটনা ঘটেছে সেখানেই। জানা যাচ্ছে, মৃতা সুমিতাদেবী পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটের বাসিন্দা। তবে থাকতেন শিয়ালদহে বোনের বাড়িতে। কয়েকদিন আগে দুপুরে মধ্যমগ্রামে ফাল্গুনী ও তার মা আরতির বাড়িতে আসেন তিনি। জানা যাচ্ছে, সম্পত্তি, গয়নাগাটি নিয়ে দুপক্ষের গোলমাল ছিল। ফাল্গুনীর স্বামী থাকেন অসমে, সেখানে কাজ করেন তিনি। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে ফাল্গুনীর সম্পর্ক ভালো নয়। অসমে তাঁদের সম্পত্তি আছে। এছাড়া সুমিতাদেবীর কিছু গয়না সম্ভবত ফাল্গুনীর ব্যাঙ্কের লকারে রাখা। অভিযোগ, তা নিয়ে উভয়ের বাকবিতণ্ডার মাঝে ইট দিয়ে সুমিতাকে মারে ফাল্গুনী। তাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
এরপর দেহ লোপাটের উপায় খুঁজতে থাকে ফাল্গুনী ও তার মা আরতি। দেহটি বড় ট্রলিতে ঢোকানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু মৃতার দুটি পা ধরছিল না ট্রলিতে। তাই তা বঁটি, কাটারি দিয়ে পা কেটে তবেই ঢোকানো হয়। ফাল্গুনী মাঝে দাবি করে, খুন দুদিন আগেই হয়েছে। মৃতদেহের পচা গন্ধ ঢাকতে রাসায়নিক স্প্রে করে রাখা হয়েছিল। শেষে দেহ লোপাটের জন্য জায়গা খুঁজে বেড়াচ্ছিল ফাল্গুনী। এমনকী তার কাছে আগেরদিনের মধ্যমগ্রাম থেকে পার্কসার্কাসের একটি রেল টিকিট মিলেছে। মনে করা হচ্ছে, রেকি করতে গিয়েছিল সে। তারপর ফের পরিকল্পনা বদলে ট্রেনে করে ট্রলি মধ্যমগ্রাম থেকে শিয়ালদহে নিয়ে এসে গঙ্গায় ফেলার চেষ্টা করে তারা। যে গাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা পালিয়েছিল, সেই গাড়িটি ট্রেস করা গিয়েছে। তা দমদমের গাড়ি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.