ছবি: প্রতীকী
দীপঙ্কর মণ্ডল: মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। চলতি বছর পরীক্ষায় বসবে ১০ লক্ষ ৬৪ হাজার ৯৮০ জন। যদিও সংখ্যাটা গত বছরের তুলনায় ১৮ হাজার ৪০৮ জন কম। আর এই পরীক্ষার্থী কমে যাওয়ার এক অদ্ভুত যুক্তি খাড়া করলেন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়৷ সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “রাজ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের হার বাড়ছে। তাই মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী কমছে।” যদিও নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান পর্ষদ সভাপতির বক্তব্যের সঙ্গে মিলছে না৷ সেই পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছরই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ভোটারের সংখ্যা। তাহলে মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী কমার প্রকৃত কারণ কী? যদিও সেই উত্তর পাওয়া যায়নি। শিক্ষা মহলের ধারণা, ছাত্রছাত্রীরা ক্রমশ দিল্লি বোর্ডের দিকে ঝুঁকছে। আর সেই কারণেই রাজ্য বোর্ডে কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা।
[৪০ বছর ধরে মলাট দিতে বইমেলায় হাজির এই ব্যক্তি ]
গত বছর উত্তরবঙ্গ থেকে মাধ্যমিকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। হোয়াটস অ্যাপে ভুয়ো প্রশ্ন ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টাও হয়েছিল। পর্ষদ মনে করছে যত নষ্টের গোড়া মোবাইল ফোন। তা নিয়ে চিন্তায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদও। কতৃর্পক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেন্টার ইনচার্জ, অফিসার ইনচার্জ, ভেনু ইনচার্জ, ভেনু সুপারভাইজার ও অতিরিক্ত ভেনু সুপারভাইজার ছাড়া কারও কাছে মোবাইল থাকবে না। পরীক্ষা শুরু ১২ টা থেকে। ১১.৪০ মিনিটে প্রশ্নের প্যাকেট খুলতে হবে। পাঁচ মিনিট আগে খাতা দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত বছর পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ময়নাগুড়ির একটি স্কুলে মাধ্যমিকের প্রশ্নের প্যাকেট খোলা হয়েছিল। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সতর্ক হয়েছে পর্ষদ। ফর্ম ফিল-আপ করা সবাই অ্যাডমিট পেয়েছে বলে দাবি করেছে পর্ষদ।
তবে এদিনই সল্টলেকে পর্ষদের অফিসের বাইরে জনা পঞ্চাশেক পড়ুয়া অ্যাডমিটের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। কল্যাণবাবুর দাবি, যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তারা কেউ টেস্টে পাশ করেনি। এবার আঠারো হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী কমার কারণ হিসাবে পর্ষদ সভাপতি জানান, রাজ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের হার বাড়ায় মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী কমছে। তবে বহিরাগত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সামান্য বেড়েছে। গত বছর বহিরাগত পরীক্ষার্থী ছিল ৮২৩। এবার ৯১৬ জন বহিরাগত মাধ্যমিকে বসছে। এবার সংশোধনাগার থেকে কেউ মাধ্যমিক দিচ্ছে না। প্রধান পরীক্ষকের সংখ্যাও এবার বেড়েছে। গতবছর ছিলেন ১০২৫। এবার প্রধান পরীক্ষক থাকছেন ১৫৩৭ জন। বেড়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যাও। মাধ্যমিক চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
[মগজ কতটা সচল? উত্তর খুঁজতে বইমেলায় বুদ্ধি মাপার হিড়িক]
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ এড়াতে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের মোবাইল তালাবন্দি অবস্থায় স্কুলের আলমারিতে রাখতে হবে। পরীক্ষার শেষে মোবাইল ফেরত দেওয়া হবে। মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এদিন জানিয়েছেন কল্যাণবাবু। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রদের থেকে ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। ছাত্রীদের সংখ্যা ১৩ শতাংশ বেশি। পরীক্ষা শুরু হবে দুপুর ১২ টা থেকে শেষ হবে ৩ টে পর্যন্ত। সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হবে প্রশ্নপত্র। সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে মুখবন্ধ খামে হলে প্রশ্নপত্র পৌঁছবে। ১১টা ৪৫ মিনিটে পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হবে প্রশ্নপত্র। অতিরিক্ত প্রশ্নপত্র থাকলে, সেগুলি মুখবন্ধ খামে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিয়ে দিতে হবে। ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কন্ট্রোলরুম চালু করেছে পর্ষদ (২৩২১-৩৮৭২, ২৩৫৯-২২৭৮)। কারও অ্যাডমিট বা রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা থাকলে পর্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশেও পর্ষদের পরামর্শ, মোবাইল কেউ নিজের কাছে রাখতে পারবে না। এমনকী হাতঘড়ির ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি করা হয়েছে। ডিজিটাল ঘড়ি চলবে না। শুধুমাত্র সময় দেখা যাবে এমন ঘড়ির ছাড়পত্র পাওয়া যাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.