নব্যেন্দু হাজরা: জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো সম্প্রসারণের কাজে বাধা বি সি রায় বা বিধান মার্কেট। কারণ ধর্মতলায় স্টেশন তৈরি করতে গেলে এই মার্কেটকে অন্যত্র সরাতে হবে। অথচ সেই অনুমতি দেয়নি সেনা। ফলে এই মেট্রো রুট এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত হওয়া নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছিল। তবে এবার সেই মার্কেটকে সরাতে বিকল্প প্রস্তাব দিল কেএমআরসিএল।
আপাতত ঠিক হয়েছে, ধর্মতলা স্টেশন তৈরির কাজ চলাকালীন বিধান মার্কেটটিকে মাউন্টেটেড পুলিশের (ঘোড়পুলিশ) অফিসের দক্ষিণে অস্থায়ীভাবে সরিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কাজ শেষ হওয়ার পর আবার পুরনো জায়গায় মার্কেটটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়াও এই মার্কেট সরানো নিয়ে একাধিক প্রস্তাব কেএমআরসিএলের তরফে দেওয়া হয়েছে।
জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রোর কাজের জন্য বিধান মার্কেট সরানো নিয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠক হয়। সেখানে কেএমআরসিএল, আরভিএনএল, কলকাতা পুলিশ, পরিবহণ দপ্তর, বন দপ্তর, কলকাতা পুরসভা-সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই আলোচনা হয়, কীভাবে এই মার্কেটকে সরিয়ে এসপ্ল্যানেড মেট্রোস্টেশন তৈরির কাজ করা যায়। উঠে আসে একাধিক প্রস্তাব।
কেএমআরসিএলের তরফে বলা হয়, প্রথমত কার্জন পার্কে সরানো হতে পারে ময়দান মার্কেটটিকে। সেখানে জি+ ১ বিল্ডিং তৈরি করা যেতে পারে। সেই অনুমতি না মিললে একতলা বিল্ডিং তৈরি করে কিছু দোকান এল-২০ বাসস্ট্যান্ডে তৈরি করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত স্টেশন তৈরির কাজ চলাকালীন ময়দান মার্কেটটিকে মাউন্টেটেড পুলিশের অফিসের দক্ষিণে অস্থায়ীভাবে সরিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কাজ শেষ হওয়ার পর আবার পুরনো জায়গায় মার্কেটটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আর তৃতীয়ত, ময়দান মার্কেটটিকে যথাস্থানে রেখে দুধারে অস্থায়ী পাঁচিল দিয়ে ঘিরে তৈরি হবে স্টেশন। মার্কেটের দুপাশে তৈরি হবে স্টেশন। কাজ শেষ হলে পাঁচিলটি ভেঙে দেওয়া হবে।
ময়দান মার্কেটটি তৈরি হয়েছে সেনাবাহিনীর এলাকায়। মেট্রো জানায়, সেনার তরফে তাদের জানানো হয়েছে, তাদের জমিতে বেআইনিভাবে ওই মার্কেট রয়েছে। এবার তা সরিয়ে যদি অন্যত্র তাদের জায়গা দেওয়া হয়, তবে এই বে-আইনি মার্কেটকে বৈধতা দেওয়া হবে। তাই তাঁদের পক্ষে এই মার্কেট সরানো সম্ভব নয়। আর তারপরই বিকল্প স্থান খোঁজা শুরু করে রেল এবং রাজ্য। উন্নয়নের প্রশ্নে রাজ্যের তরফে রেলকে সবদিক থেকে সহায়তা করছে এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল।
পাশাপাশি এখানে স্টেশন তৈরিতে বেশ কিছু গাছকে সরাতে হবে। আরভিএনএলের তরফে এবিষয়ে বনদপ্তরের ছাড়পত্রের আবেদন করা হয়েছে। এই গাছগুলোকে ফের কোথায় পোঁতা হবে তার জন্য কিছু জায়গাও চিহ্নিত করেছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভা এবিষয়ে ছাড়পত্র দিয়েছে।
সেনার আপত্তিতে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো। এসপ্ল্যানেডের বদলে পার্কস্ট্রিটই থমকে যেতে পারতো এই প্রকল্প। তবে এবার জট কাটার একটা ইঙ্গিত মিলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.