সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের। নদীবাঁধগুলির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। একাধিক জায়গায় ভেঙেছে গাছ। বিদ্যুতের খুঁটির অবস্থাও তথৈবচ। তার ফলে আমফানের তাণ্ডবের পর সপ্তাহখানেক কেটে গেলেও মেলেনি বিদ্যুৎ পরিষেবা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নদীবাঁধ মেরামতির নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছনোর জন্য আরও তৎপর হতে হবে বলেও জানান তিনি।
আমফানের পরিস্থিতি নজর রাখার জন্য গত বুধবার নবান্নে কন্ট্রোলরুম খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে প্রতি মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের দিকে নজর রেখেছিলেন তিনি। সেদিন সন্ধেয় ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি দেখে মাথায় হাত দিয়েছিলেন তিনি। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মেদিনীপুরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমফানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকার সুন্দরবন, নামখানার নদীবাঁধগুলিও। তার ফলে জলের তলায় চলে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। তার উপর আবার সামনেই রয়েছে পূর্ণিমা। ফলে কোটালে আরও সমস্যা বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নদীবাঁধগুলিকে মেরামতির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভেঙে পড়া গাছের গুঁড়ি কীভাবে বাঁধের কাজে লাগানো যেতে পারে, সে পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। সুন্দরবনের মতো গ্রামীণ এলাকাগুলিতে দ্রুত পানীয় জলের পরিষেবা ঠিক করার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।
এদিকে, গোসাবা, পাখিরালা, ঝড়খালি, কুমিরমারি, পুইজালি ও আমতলির মতো একাধিক দ্বীপে ভেঙে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ট্রান্সফর্মারগুলিও বিকল। তার ফলে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। তবে জল না সরলে বিদ্যুতের খুঁটি বসিয়ে আবারও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব নয় বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলাশাসকদের আমফান বিপর্যস্ত এলাকার মানুষদের কাছে ত্রাণসামগ্রী এবং আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নোনাজল ঢুকে বারবারই গ্রামের ফসল নষ্ট হয়। আমফানও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রায় সাড়ে দশ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত। তার ফলে মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। সেই সমস্যা মেটাতে সমুদ্রের নোনাজল যেখানে ঢুকেছে সেখানেও এবার পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হবে বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী। নষ্ট হয়েছে ১ লক্ষ পানের বরোজও। ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষিদের পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা রাজ্য সরকারের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.